বিশ্বে সবচেয়ে বায়ুদূষণের কবলে থাকা শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৭তম। আর রাজধানী শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান প্রথম। এই শহরের বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তু কণিকা অর্থাৎ পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫ পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। ঢাকার বাতাসে দূষিত বস্তু কণার পরিমাণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। এই শহরের মধ্যে আবার এলাকাভেদে দূষণের রকমফের আছে। ঢাকায় দূষণের শীর্ষ সারিতে রয়েছে পুরান ঢাকার ইংলিশ রোড, ফার্মগেট, সেগুনবাগিচা, ধানমন্ডির শংকর, নয়াপল্টন, হাজারীবাগ, মিরপুর এলাকা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়ুমান যাচাই সফটওয়্যার এয়ার ভিস্যুয়াল সংস্থা ঢাকার মোট ছয়টি স্থানের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে থাকে। গুলশান, মিরপুরের রোকেয়া সরণি, বারিধারা, উত্তরা ও নর্দা এলাকায় বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে স্থাপন করা যন্ত্র থেকে তারা ঢাকার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে। শনিবার বিকাল ৪টায় ঢাকার বায়ুমান সূচক ছিল ৩১৫ একিউআই। করোনায় লকডাউনের সময় ঢাকার বায়ুর মান ভালো হয়েছিল। এখন আবারও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে ঢাকার বাতাস। গত বছর ঢাকার বায়ুমান সূচক আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। তখন পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাস্তায় প্রতিদিন পানি দেওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয় আদালত। মানুষের স্বাভাবিক সহ্যক্ষমতা ৫০ একিউআই হলেও ঢাকার বায়ুমান ছয় গুণ ওপরে অবস্থান করছে। বায়ুদূষণ মোকাবিলার প্রথম কাজ হচ্ছে দূষণের উৎস বন্ধ করা। দ্বিতীয়ত, শহরের বিভিন্ন স্থানে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা এবং জলাশয়গুলো রক্ষা করা। দূষিত বায়ুর মধ্যে মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে, সেই ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। তবে সবার আগে বায়ুদূষণকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংকট হিসেবে দেখতে হবে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এটি সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।