শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে ছাঁটাই

স্বার্থরক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

করোনাভাইরাসের কারণে ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ার জেরে শ্রমিক ছাঁটাই বাড়ছে। চলতি মাসে পোশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক ছাঁটাই না করতে শ্রম মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকবার মালিকদের অনুরোধ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও মালিকপক্ষের নেতারা সুবিধা আদায়ে দলবেঁধে একাধিকবার শ্রম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লম্বা সময় বৈঠক করেছেন। কিন্তু শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় মালিকদের অনুরোধ করেও বৈঠকে আনতে পারেনি। অথচ দফায় দফায় মালিকরা সরকারি সুবিধা পেলেও শ্রমিকরা পেয়েছে বঞ্চনা। কম সুদের ঋণ ও কর প্রণোদনা পেতে শ্রমিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে মালিকরা। শ্রমিক নেতারা বলছেন, গার্মেন্টে নীরব ছাঁটাই চলছে। অন্যদিকে মালিকরা শ্রমিকদের ওপর কাজের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। এভাবে গার্মেন্ট শ্রমিকদের এক ধরনের নির্যাতন ও শ্রম শোষণ করা হচ্ছে। কিছু কারখানা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটি দিচ্ছে না। তারা সামাজিক দায়বদ্ধতা ভুলে গেছে। আগে কারখানাগুলোয় শ্রমিক সংকট ছিল, এখন নেই। ফলে শ্রমিকরা একবার চাকরি হারালেই বিপদে পড়ছে। চলমান সংকট উত্তরণে ড্রাগন, এ ওয়ান, ইউনিক, মিতালী ফ্যাশনসহ বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) মাঠ জরিপে দেখা যায়, এপ্রিলে পোশাক খাতের পুরুষ কর্মীরা গড়ে মাত্র ৪৩ ঘণ্টা ও নারী কর্মীরা ৪২ ঘণ্টা কাজ করে। মে মাস থেকে কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি পেতে থাকে। শ্রম সংগঠনগুলোর অভিযোগ, করোনার সুযোগ নিয়ে পুরনো শ্রমিক, ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত ও যারা প্রতিবাদী তাদেরই বেশি ছাঁটাই করা হচ্ছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা আইনানুগ ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। গার্মেন্ট শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর