রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দূষণে বিপন্ন নদ-নদী

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

সাভারে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকারী ট্যানারির বর্জ্যে দূষণের শিকার হচ্ছে বংশী, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, বুড়িগঙ্গাসহ ছয় নদ-নদী। অথচ বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে সাভারের পরিকল্পিত চামড়াশিল্প নগরী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু ট্যানারি ইতিমধ্যে সেখানে উৎপাদন শুরু করেছে। কথা ছিল সাভারের চামড়া শিল্পনগরের ১৫৫টি ট্যানারির জন্য একটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার হবে। পাইপলাইন দিয়ে সব ট্যানারির বর্জ্য ওই সিইটিপিতে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো, চীনা প্রতিষ্ঠান জেএলইপিসিএ-ডিসিএল জেভিকে ২০১২ সালের ১১ মার্চ সিইটিপি নির্মাণের কার্যাদেশ দিয়ে আজও তা শেষ করতে পারেনি বিসিক। হতাশার দিক হলো, দেড় বছরের মধ্যে সিইটিপি নির্মাণ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু পেরিয়ে গেছে আট বছর। জানা গেছে, বুড়িগঙ্গা, বংশী ও ধলেশ্বরীর পানি সবচেয়ে দূষিত। এসব নদীর পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মাছ নেই বললেই চলে। জলজ উদ্ভিদের অস্তিত্বও বিপন্ন। নদীকেন্দ্রিক স্বল্প আয়ের মানুষের জীবিকা নির্বাহ বিপর্যস্ত। দূষিত পানি ব্যবহারে মানুষ চর্মরোগ ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে আশপাশের বাসিন্দাদের। কারখানায় তরল, কঠিন ও বায়বীয় তিন ধরনের বর্জ্য উৎপন্ন হয়। প্রতিদিন যে পরিমাণ তরল বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া নতুন নতুন কারখানা চালু হওয়ায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষমতা ও বর্জ্য বেড়েছে। শিল্পনগরীর কঠিন বর্জ্যর মধ্যে রয়েছে পশুর খুর, নখ, কান, লেজ, শিং, হাড়, লোম, মাংসের ঝিল্লি ইত্যাদি। ডাম্পিং ইয়ার্ডে এগুলো ফেলা হয়। দূষণ বাড়লেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অ্যাপেক্স ট্যানারি ও বে ট্যানারি নিজেদের কারখানার বর্জ্য পরিশোধন ও ব্যবস্থাপনার জন্য নিজস্ব উদ্যোগে ইটিপি নির্মাণের অনুমতি চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার দুই-আড়াই বছর পর অনুমতি পেয়েছে। চামড়াশিল্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। আমাদের আশা, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর উদোগ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর