সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মানবিক পেশা চিকিৎসা

ব্যবসার মনোভাব ছাড়তে হবে

চিকিৎসা দুনিয়া জুড়েই সেবাধর্মী মানবিক পেশা হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে অবশ্য সেবাধর্মী এই মহৎ পেশাকে নিছক ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছে লোভী কিছু মানুষ। তাদের জন্য চিকিৎসা পেশা আকাশছোঁয়া মর্যাদা হারিয়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের বেশির ভাগ প্রাইভেট প্র্যাকটিসে সময় কাটান এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। রোগী দেখার সময় তারা অকারণেও বিভিন্ন বিষয়ে প্যাথলজিক্যাল টেস্টের জন্য তাদের পছন্দনীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান। বিনিময়ে তারা লাভ করেন মোটা অঙ্কের অর্থ। প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম লেখার সময় কোন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন বেশি পাওয়া যায় সে বিষয়টিই গুরুত্ব পায় একশ্রেণির লোভী চিকিৎসকের কাছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘সরকারি চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে বেশি ব্যস্ত হওয়ার পেছনে সরকারের ভুল নীতিই দায়ী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত সরকারি চিকিৎসকদের হাসপাতালের বাইরে চেম্বার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া। প্রয়োজনে নির্ধারিত সময়ের পর সরকারি হাসপাতালেই চেম্বার করতে পারেন চিকিৎসকরা। এতে রোগীদের অর্থ অপচয় কম হবে, সেবাও পাবেন। সরকার শুধু এ আইনটা করে দিলেই চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসে রাশ টানা যাবে। তখন আর তারা আর্থিক লোভের দিকে ঝুঁকবেন না। সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে রোগীপ্রতি গড়ে মাত্র ৪৮ সেকেন্ড সময় দেন চিকিৎসকরা। মিনিটের কাঁটায়ও পৌঁছে না চিকিৎসকের সময়। চিকিৎসকের মনোযোগ পেতে রোগীদের বেগ পেতে হয়। এ ছাড়া দেশের চিকিৎসকদের অনেককেই প্রেসক্রিপশন ও ভিজিটিং কার্ডে বিচিত্র সব ডিগ্রি লিখতে দেখা যায়, যা প্রতারণার শামিল। চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে সীমাহীন বিশৃঙ্খলা অবস্থা বিরাজ করছে তার অবসানে চিকিৎসকদের প্রতি সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে। বাইরে প্রাইভেট ক্লিনিক বন্ধ করে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ডিউটির পর নির্দিষ্ট ভিজিটে রোগী দেখার নিয়ম চালু করা যেতে পারে।  প্রতারণার যে কোনো ঘটনার বিষয়ে সরকারকে কঠোর মনোভাব দেখাতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবসার মনোভাব ছাড়তে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর