সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘুষ দুর্নীতির দৌরাত্ম্য

উৎসমূলে আঘাত হানতে হবে

ঘুষ-দুর্নীতির অভিশাপ থেকে কিছুতেই রক্ষা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। প্রজাতন্ত্রের মালিক হিসেবে সাংবিধানিকভাবে তাদের সম্মান দেখানো হলেও সরকারি অফিসগুলোতে সেবা নিতে গিয়ে প্রতি পদে পদে তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ঘুষ না দিয়ে পার পাওয়া মানুষের সংখ্যা এক হাজারেও একজন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। মানুষ যাতে সেবা পায় এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে সম্মানজনক জীবন যাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে গত এক দশকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ঘুষ-দুর্নীতির থাবা তাতে খুব একটা বন্ধ হয়েছে, তা দাবি করার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ‘গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার-এশিয়া ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত ১২ মাসে যারা সরকারি সেবা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মানুষ একবারের জন্য হলেও ঘুষ দিয়েছেন। মূলত এশিয়া অঞ্চলের ১৭টি দেশের ওপর চালানো জরিপ থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১৭ দেশের ২০ হাজার নাগরিকের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিষয়ে বলা হয়েছে, দেশে বিদ্যমান সরকারি সেবাগুলোর মধ্যে পুলিশের কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩৭ শতাংশ ঘুষ দিতে হয় নাগরিককে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয় ৩৫ শতাংশ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৮ শতাংশ মনে করেন, দুর্নীতি বাড়ছে। আর ২৮ শতাংশ মনে করেন, দুর্নীতি আগের মতোই আছে। প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে, সরকারি দুর্নীতিকে বড় সমস্যা বলে ভাবলেও ৬১ শতাংশ মানুষ মনে করে সরকার দুর্নীতি সামাল দিতে ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। সংসদ সদস্যদের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে ৩২ শতাংশের।  ঘুষ-দুর্নীতির যবনিকাপাত টানতে এ ব্যাপারে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। দুর্নীতির উৎসগুলোতে হানতে হবে কঠোর আঘাত। এ ব্যাপারে নিরাপস ভূমিকা পালনের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর