রেল যোগাযোগ দুনিয়াজুড়েই সাশ্রয়ী ও তুলনামূলক বিবেচনায় নিরাপদ পরিবহনব্যবস্থা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান রেলপথের সূচনালগ্নেই বাংলাদেশ এর বিস্তৃতি ঘটে। পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ
ও সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হিসেবে লাখ লাখ মানুষের আস্থা অর্জন করে। রেল যোগাযোগকে এতটাই গুরুত্ব দেওয়া হতো যে পাকিস্তান আমলে এমনকি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জাতীয় বাজেটের পাশাপাশি সংসদে রেল বাজেটও পেশ করা হতো। ’৭৫ সালের পর রাজনীতিতে সড়ক পরিবহন মালিকদের দখলদারিত্ব শুরু হয়। ক্ষমতা কুক্ষিগতকারী অবৈধ শাসকরা নিজেদের রাজনৈতিক দল গঠনে ব্যাপকহারে সড়ক পরিবহন মালিকদের দলে নেয়। তার পরই রেল পরিবহনকে উপেক্ষা করার অশুভ প্রক্রিয়ার শুরু। বন্ধ করে দেওয়া হয় অনেক রেলপথ। দেশের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সড়কব্যবস্থার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেছেন, অতীতে একটি দলের আমলে রেলকে প্রায় গলা টিপে হত্যার প্রক্রিয়া চলে। রেললাইন সংকোচন করা হয়। তার সরকার ক্ষমতায় এসে রেলকে পুনরুজ্জীবিত করছে। বাংলাদেশকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হবে। সারা দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে যাওয়ার সমীক্ষা শুরু হয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সেখান থেকে কক্সবাজার ও টেকনাফ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। অর্থাৎ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়তে ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সংযোগ স্থাপনে নজর দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিব রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য গুরুত্বের দাবিদার। এতে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভবিষ্যৎ গাইডলাইনের প্রকাশ ঘটেছে।যার বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।