আল কোরআন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মহান আল্লাহ যেসব উদাহরণ দেখিয়ে মানুষকে ইমান আনার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন, উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং আল্লাহর আয়াত বা নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হলো প্রকৃতি ও পরিবেশের উপাদান। সুরা মুলকে একটি উদাহরণ দিতে গিয়ে আল্লাহ বলেছেন, ‘খুঁটিহীন আকাশ আমি ঝুলিয়ে রেখেছি, পাখিকে বাতাসে ভাসিয়ে রেখেছি। এসব নিদর্শন দেখার পরও কি অবিশ্বাসীরা ইমান আনবে না?’ সুরা তারিকে আল্লাহ কাফিরদের একটি জটিল প্রশ্নের খুব সহজ উত্তর দিতে গিয়ে পরিবেশের উদাহরণ দিয়েছেন, ‘জমিন যেমন চৌচির হয়ে ফেটে যাওয়ার পর আবার বৃষ্টির ছোঁয়ায় সজীব হয়ে ওঠে, তেমনি মানুষও মরে যাওয়ার পর তাকে আবার জীবিত করে তোলা হবে।’

প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার বিষয় উল্লেখ করে সুরা কাফে আল্লাহ বলেন, ‘আমি জমিনকে বিস্তীর্ণ করেছি এবং তার ওপর পাহাড় গেড়ে দিয়েছি। আর তাতে উৎপন্ন করেছি নয়নাভিরাম সব উদ্ভিদরাজি।’ সুরা নাহলে বলেছেন, ‘আমি পৃথিবীর ওপর পাহাড়কে পেরেকের মতো গেড়ে দিয়েছি, যাতে এটা তোমাদের নিয়ে নড়ে না ওঠে।’ আল কোরআনের পাতায় প্রকৃতি-পরিবেশের এমন অনেক আলোচনা রয়েছে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ব্যাপারে রসুল (সা.) সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সাহাবিদের কোনো যুদ্ধে পাঠানোর আগে নসিহত করে বলতেন, বিজিত অঞ্চলের কোনো গাছপালা ধ্বংস করে পরিবেশ নষ্ট করবে না।’ বিনা কারণে গাছের পাতা ছেঁড়ার কারণে একজন সাহাবিকে তিরস্কার করেছিলেন রসুল (সা.)। পরিবেশে যেন রোগ-জীবাণু না ছাড়ায় তাই রসুল (সা.) উম্মতকে হাঁচি দেওয়ার আগে মুখ ঢাকা শিখিয়েছেন। হাতে যেন জীবাণু না লাগে তাই রসুল (সা.) শৌচকার্যের আগে ঢিলা নিয়ে পবিত্র হওয়া শিখিয়েছেন। কোরআন-সুন্নায় নির্দেশিত পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়গুলো আমরা জানব এবং আমাদের জীবনে পুরোপুরি মেনে চলব ইনশা আল্লাহ। তাহলে আমরা সুস্থজীবন লাভ করব, করোনাভাইরাস মহামারীসহ সব অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দিন।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন।