বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম

মধ্যভোগীদের দৌরাত্ম্য থামাতে হবে

কৃষক দেশের মানুষের খাদ্য জোগায়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তারা ফসল ফলায়। কিন্তু ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়া তাদের জন্য ক্রমেই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। ক্ষুদ্র আয়তনের বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। গত পাঁচ দশকে জনসংখ্যা বেড়ে ৭ কোটি থেকে ১৭ কোটি হয়েছে। বাড়তি জনসংখ্যার বসবাসের জন্য এবং রাস্তাঘাট, বাজার, শিল্পকারখানা স্থাপনে চাষযোগ্য জমির একটা বড় অংশ নষ্ট হয়েছে। তার পরও দেশের কৃষকের কঠোর পরিশ্রমের কারণে গত পাঁচ দশকে খাদ্য উৎপাদন তিন গুণের বেশি বেড়েছে। স্বাধীনতার আগে যে দেশের সিংহভাগ মানুষ অনাহার-অর্ধাহারে কাটাত তারা এখন তিন বেলা পেট ভরে খেতে

পারছে। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষকের কঠোর পরিশ্রমের কারণে।

কিন্তু কৃষক তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কত দিন দেশের মানুষের জন্য খাদ্য জোগাবে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষিপণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। উদ্যোগটি ভালো। তবে এর সুফল যাতে কৃষক পায়

তাও নিশ্চিত করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কৃষক কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়ালে বাজারদর পড়ে যাওয়ায় অনেক সময় তারা পণ্য উৎপাদনের খরচ ওঠাতেও ব্যর্থ হয়। অথচ কোনো বছর জলোচ্ছ্বাসে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন হ্রাস পেলে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে গিয়ে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ে। সাধারণ ভোক্তারদের জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যায়। এ সমস্যার সমাধানে শুধু পণ্যের মূল্য বেঁধে দেওয়া নয়, কৃষিপণ্য পরিবহন সহজতর করার উদ্যোগ নিতে হবে। পণ্যবাহী ট্রাক যাতে চাঁদাবাজির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি। কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। কৃষিপণ্যে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার কথাও ভাবা যেতে

পারে। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষিপণ্য বিপণনে মধ্যভোগীদের দৌরাত্ম্যের অবসান ঘটাতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর