বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি

সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে রুখতে হবে

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পর তিন পার্বত্য জেলার উন্নয়নকে যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে তা চোখে পড়ার মতো। পরিবর্তনের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তিন পাহাড়ি জনপদে। তবে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাফল্য অনেক ক্ষেত্রে ম্লান হয়ে পড়ছে। পাহাড়ি জনপদের অধিবাসীদের ভাগ্যোন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপগুলো যতটা ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হয়েছিল তা সম্ভব হচ্ছে না। পাহাড়ি সংগঠনগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্বে গত দেড় বছরে তিন জেলায় বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এমনকি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে যখন তখন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তান্ডবে পার্বত্য তিন জেলায় শান্তি অধরাই থেকে যাচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত থাকায় পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনুসরণ করে ৩৫টি অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র সমর্পণের পরিবর্তে আঞ্চলিক দলগুলোর মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর ২৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পাহাড়ি তিন জেলায় কাক্সিক্ষত শান্তি ফিরে না আসা দুর্ভাগ্যজনক। পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর পারস্পরিক বিরোধ, অব্যাহত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও জাতিগত বিদ্বেষের কারণে পার্বত্য জনপদে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। ম্লান হয়ে যাচ্ছে গত এক যুগে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন খাতের ব্যয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য উন্নয়নকাজ এগিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাহাড়ি সংগঠনগুলো বছরে তিন জেলা থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি করছে। পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম অগ্রসর এলাকায় পরিণত হবে। বিবেচিত হবে পর্যটকদের স্বর্গভূমি হিসেবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জোরদার করতে হবে। তারা যাতে কোনো ছাড় না পায় তা নিশ্চিত করাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর