শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

মহাত্মা গান্ধী

মহাত্মা গান্ধী

বিশ্ব ইতিহাসের এক অনন্য পুরুষ মহাত্মা গান্ধী। রুপার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর জন্ম ভারতের গুজরাট রাজ্যের পোরবন্দর নামক এক ক্ষুদ্র দেশীয় রাজ্যে। ব্রিটিশ শাসনামলে এটি করদ রাজ্য হিসেবে বিবেচিত হতো। গান্ধীর বাবা ছিলেন এ রাজ্যের দেওয়ান। এ পদটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য। যে কারণে গান্ধীর স্বনামধন্য জীবনী লেখক রবার্ট পাইন তাকে ‘দ্য সান অব দ্য প্রাইমমিনিস্টার’ বা ‘প্রধানমন্ত্রীর সন্তান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গান্ধী নিজে ছিলেন ব্যারিস্টার। ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের অবিসংবাদিত নেতা। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বও দেন তিনি। নিজে ধনী পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও মহাত্মা গান্ধী ছিলেন দারিদ্র্যপীড়িত ভারতের প্রতিমূর্তি। তিনি এতই নিরাভরণ জীবনযাপন করতেন যে, তার তুলনা মেলা ভার। কম দামের একটি ধুতি ছিল তাঁর বহুল পরিচিত পোশাক। এ ধুতি পরে তিনি তাঁর পুরো জীবনই কাটিয়েছেন। গরিব দেশের যিনি নেতা, সাধারণ মানুষের চেয়ে উন্নতমানের কোনো পোশাক তাঁর জন্য শোভনীয় নয়- এই ছিল গান্ধীর উপলব্ধি। এমনকি ভারতের স্বাধীনতার দাবি আদায়ে তিনি যখন ১৯৩১ সালে ইংল্যান্ড যান, তখন পত্রিকায় তাঁর ছবি দেখে ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জ অবজ্ঞা করে বলেছিলেন- ‘ওয়ান হাফ বেগার হ্যাজ কাম টু বেগ ইন্ডিপেন্ডেনস ফর ইন্ডিয়া! অর্থাৎ এক অর্ধনগ্ন ভিখারি এসেছে ভারতের স্বাধীনতা ভিক্ষা করতে।’ মহাত্মা গান্ধী শুধু সাধারণ পোশাকই পরতেন না, তিনি ছিলেন নিরামিষ-ভোজী ও স্বল্প আহারি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সবার শ্রদ্ধার পাত্র। রাজনৈতিক ভাবে মুসলিম লীগের সঙ্গে কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব থাকলেও তারাও তাকে ‘মহাত্মা’ সম্বোধনে সম্মান করতেন। কংগ্রেসের অবিসংবাদিত নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি কখনো দলের সভাপতির পদ নেননি। এমনকি স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি সেদিকে হাত বাড়াননি। মানুষের হৃদয়-রাজ্যের রাজা হওয়ার সাধনা করে গেছেন এ মহাপুরুষ। এদিক থেকে তিনি ছিলেন শতভাগ সফল। ভারতের রাষ্ট্রপিতা হিসেবে তিনি অমর হয়ে থাকবেন ইতিহাসে। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেও তিনি অহিংসা ও শান্তির মূর্ত প্রতীক হিসেবে মানুষের হৃদয়-রাজ্যে ঠাঁই করে আছেন।     

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর