শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চ্যালেঞ্জের মুখে অর্থনীতি

ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের বিকল্প নেই

কভিড-১৯ গত এক বছরে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সংক্রমণের হার কয়েক কোটি ছাড়িয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহামারীতে রূপ নেওয়া ভয়াল এ ভাইরাসে মানুষের জীবন রক্ষার মতোই শক্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি বাঁচিয়ে রাখা। শেষোক্ত ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে অর্ধাহার-অনাহারের যে ছোবল আঘাত হানবে তার ভয়াবহতা কভিড-১৯-এর চেয়ে বেশি। কভিড-১৯ মানব জাতির অস্তিত্বের জন্য যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছিল তাতে মানুষই শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বিশ্ব। যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়াসহ অনেক দেশ ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরুও করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে কভিড-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতি সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে তা হলো বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত। সব দেশই চাইবে বিদেশি বিনিয়োগ ধরতে। এ কারণে উদ্যোক্তাদের জন্য ছাড়ও দেবে অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকেও বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কঠিন চ্যালেঞ্জিং সময় পার করতে হবে। কভিডের কারণে কঠিন সময় পার করছে দেশের অপ্রাতিষ্ঠানিক ও বেসরকারি খাত। নতুন কর্মী নিয়োগ প্রায় বন্ধ। প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে সীমিত পরিসরে কর্মী নিয়োগ চালু রেখেছে ব্যাংক, বীমাসহ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের হিসাবে কভিডের কারণে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছে। আর আয় কমেছে ৮৪ শতাংশ মানুষের। যারা কাজ হারিয়েছে বা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ভয়াবহ এ সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে গতি সৃষ্টি করা। কিন্তু সেখানে নেতিবাচক বাস্তবতা বিরাজ করছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব কমেছে ৯৩ শতাংশ। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে বিনিয়োগ কমেছে ৭২ শতাংশ। স্বীকার করতেই হবে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশ যে দুঃসময় অতিক্রম করছে তা গত তিন দশকে কখনো অনুভূত হয়নি। তবে এ অবস্থায় হেরে গেলে চলবে না। অসীম সাহসে বুক বেঁধে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়াস চালাতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর