শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বপ্ন যখন সত্য হলো

পদ্মা সেতু অর্থনৈতিক ভিত্তি দৃঢ় করবে

পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানো ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত গেছে এ সেতুর অবকাঠামো। সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বে এটি এক অনন্য সংযোজন। বৃহস্পতিবার বহুল কাক্সিক্ষত এ সেতুর সবশেষ স্টিলের কাঠামো (স্প্যান) বসানো হয়। ৪১তম স্প্যান বসানোর পর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর পুরোটাই এখন দৃশ্যমান। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমানতা শুরু হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। বাকি ৪০টি স্প্যান বসাতে তিন বছর দুই মাস লাগল। সড়ক ও রেলের স্লাব বসানো সম্পন্ন হলে সেতু দিয়ে যানবাহন ও ট্রেন চলতে পারবে। এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সংযোগ স্থাপন হওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং বর্ষায় অত্যধিক স্রোত পদ্মা সেতুর কাজে কিছুটা গতি কমিয়ে দিয়েছিল। পুরো কাজ শেষ হলে যানবাহন চলাচলের পথটি হবে ২২ মিটার চওড়া এবং তা চার লেনের। মাঝখানে থাকবে বিভাজক। স্প্যানের ভিতর দিয়ে চলবে ট্রেন। ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রাজনৈতিক পট ও সরকার পরিবর্তনের কারণে থেমে যায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ। চারদলীয় জোট সরকারের সময় এ সেতু নির্মাণে তেমন কোনো কাজ হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠনের পর আবারও পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা দেন পদ্মা সেতু নির্মাণ হবে নিজেদের টাকায়। তাঁর কথা সত্যি হলো। পদ্মা সেতুর জন্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দরনগর চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। পদ্মা সেতু অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় করবে। সহজ হবে মানুষের চলাচলও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর