রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অযুত সম্ভাবনার হাতছানি

পদ্মা সেতু পাল্টে দেবে দেশের অর্থনীতি

পদ্মা সেতু ছিল গত অর্ধশতাব্দী ধরে এক স্বপ্নের নাম। সে স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে দেশের বৃহত্তম এবং বিশ্বের গভীরতম পাইলের এ সেতুর কাঠামো এখন বাস্তবতা। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরই এ সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। চলবে বাস ট্রাক গাড়ি এমনকি ট্রেন। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে- এমন সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। পদ্মা সেতুর বদৌলতে দক্ষিণের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে, এ আশা বুকে নিয়ে বড় ছোট মাঝারি শিল্প গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে সেতুর দুই পাশে বিশাল এলাকা ঘিরে বিভিন্ন স্থানে শিল্প গড়ে উঠছে। পদ্মা সেতুর সুফল কাজে লাগিয়ে পুরোদমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হলে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে। পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে লাগবে গ্যাস। ভোলায় একাধিক গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হলেই শুরু হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান। মোংলা বন্দরে আসবে গতিশীলতা। পায়রা বন্দর সচল হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে পদ্মা সেতু হবে মাইলফলক। দারিদ্র্য নিরসন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নের এ সেতু ভূমিকা রাখবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে দেশের দুটি সমুদ্রবন্দর। একটি মোংলা অন্যটি পায়রা। রয়েছে সারা দেশের সর্বোৎকৃষ্ট নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা। সামুদ্রিক বন্দর ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হিসেবে বিবেচিত হবে। স্বাধীনতার আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নগরী খুলনা ছিল দেশের অন্যতম শিল্প উৎপাদন কেন্দ্র। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল শুধু নয়, নোয়াখালী, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য সব সময় খুলনামুখী হতো। স্বাধীনতার পর যোগাযোগ-বিচ্ছিন্নতা ও গ্যাস না থাকায় পিছিয়ে পড়ে খুলনা অঞ্চল। পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু খুলনা নয়, যশোর, বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশালে শিল্প স্থাপনের ধুম পড়বে। বাংলাদেশের শিল্পায়নে তা রাখবে ব্যাপক ভূমিকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর