মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসা

সীমাবদ্ধতা উত্তরণের উদ্যোগ নিন

আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এখন ভুক্তভোগীদের শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর যেসব সরকারি হাসপাতালে বার্ন ইউনিট ছিল করোনাকালে সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে করোনার ইউনিট হিসেবে। ফলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেড়েছে। সবচেয়ে বড় সত্যি হলো, সারা দেশে এ-জাতীয় চিকিৎসার একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান এটি। ভালো চিকিৎসার জন্য স্বভাবতই ভুক্তভোগীরা তাদের স্বজনদের নিয়ে ছুটছেন এ প্রতিষ্ঠানটির দিকে। স্মর্তব্য, ২০১০ সালে রাজধানীর নিমতলী দুর্ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যুর পর দেশের ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১০টি হাসপাতালে সে উদ্যোগ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তথ্যানুযায়ী ২০১৯ সালে জরুরি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন ৬৪ হাজার ৮৯৩ জন। হাসপাতালে ভর্তি হন ৮ হাজার ৯৩৪ জন। প্রতিদিন গড়ে ২০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের চিকিৎসা দিতে আছেন তিন থেকে পাঁচজন চিকিৎসক। ৫০০ শয্যার এ প্রতিষ্ঠান চলছে জনবল সংকটের মধ্য দিয়ে। এখানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১ হাজার ১২২টি হলেও কাজ করছেন ৪৬৪ জন। পদ শূন্য ৫৯ শতাংশ। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্লাস্টিক সার্জারি অ্যাকটিভিটি রিপোর্টের তৃতীয় সংস্করণে বলা হয়েছে, আগুনে পোড়া রোগীদের ৩৪ শতাংশই মারা যান। সচেতনতা আর যথাযথ চিকিৎসার অভাবে এ মৃত্যু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিকমানের এ চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু জনবল সংকটে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। এ সংকটের সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে- এমনটিই বাঞ্ছনীয়। আগুনে পোড়া রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে তাদের এক বড় অংশের জীবন বাঁচানো যাবে। মানসম্মত চিকিৎসার জন্য যেহেতু শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিকল্প নেই, সেহেতু অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সীমাবদ্ধতা উত্তরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে আমরা- এমনটিই আশা করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর