শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের জন্ম ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬, নড়াইলের মহিষখোলা গ্রামে। বাবা আমানত শেখ ছিলেন কৃষক, মা জেন্নাতুন নেসা গৃহিণী। শৈশবেই বাবা-মা হারিয়ে অনেকটা সংসারবিরাগী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। সংসারের প্রতি মন ফিরিয়ে আনতে অভিভাবকরা তাকে ১৯৫২ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করান। স্ত্রী তোতা বিবির বয়স তখন ১২ বছর। ’৫৪ সালের শেষভাগে জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান হাসিনা খাতুন। সংসারে অভাবের ছোঁয়া লাগায় দিশাহারা হয়ে যোগ দেন মুজাহিদ বাহিনীতে। ২৬ ফেব্রুয়ারি ৫৯, তদানীন্তন ইপিআরে সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। ১৫ নভেম্বর, ৬৪ জন্মগ্রহণ করে তাঁর দ্বিতীয় সন্তান শেখ মো. গোলাম মোস্তফা কামাল। মার্চ, ’৭১-এ তিনি ছুটি ভোগরত ছিলেন গ্রামের বাড়ি। পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার খবর পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গায় ইপিআরের ৪ নম্বর উইংয়ে নিজ কোম্পানির সঙ্গে যোগ দিয়ে বিদ্রোহ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। সেক্টর গঠন হলে তাদের ওপর ন্যস্ত হয় ৮ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব। তিনি নিয়োগ পান বয়রা সাব-সেক্টরে। এ সাব-সেক্টরের অধীনে গোয়ালহাটি, ছুটিপুর ঘাট, ছুটিপুর সেনাক্যাম্প, বরনী আক্রমণে অংশ নেন এবং বীরত্ব প্রদর্শন করেন।

বরনীতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার জীবন রক্ষা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর, ’৭১, সুতিপুর প্রতিরক্ষা অবস্থানের সামনে স্ট্যান্ডিং প্যাট্রলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ নস্যাৎ করে দেন প্রায় একাই। আহত অবস্থায় অধীন সৈনিকদের নিরাপদে পেছনে পাঠিয়ে দেন এবং শত্রুর মোকাবিলা অব্যাহত রাখার সময় শাহাদাতবরণ করেন। পরে সহযোদ্ধারা তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে সীমান্তবর্তী যুদ্ধক্ষেত্র কাশীপুরে সমাহিত করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে।

সর্বশেষ খবর