শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

প্রিন্স নরোদম

প্রিন্স নরোদম সিহানুক কম্বোডীয় জাতির পিতা। ফ্রান্সের উপনিবেশ থেকে স্বাধীন কম্বোডিয়া আসে তাঁর হাত ধরেই। কম্বোডিয়া ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় ১৯৫৩ সালে। তারপর চলতে থাকে প্রিন্স নরোদম সিহানুকের শাসনামল। ষাটের দশকের সূচনালগ্নে পল পট কম্বোডিয়ায় কমিউনিজমকে চাঙা করে তুললেন, সব কমিউনিস্ট দল পল পটের নেতৃত্বে এক ছাতার তলায় এসে দাঁড়াল। সারা দেশে পল পট ও তার বাহিনীর ভালোই একটা জনপ্রিয়তা দেখা দিল। প্রিন্স সিহানুকের বিষয়টা পছন্দ হলো না। তিনি এ কমিউনিস্ট গ্রুপের নাম দিলেন খেমার-রুজ। রুজ শব্দের অর্থ লাল। নামটা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেওয়া হলেও ধীরে ধীরে এ নামটাই স্টাবলিশড হয়ে গেল। সিহানুক কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ করেন। পল পট সাগরেদদের নিয়ে পালালেন ভিয়েতনাম। আগে তো তার হাতে ছিল শুধু থিওরি। এবার এলো অস্ত্র।

১৯৭০-এর মার্চে মার্কিন মদদে কম্বোডিয়ায় একটা ক্যু হয়ে যায়। মার্শাল লন নল প্রিন্স নরোদম সিহানুককে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেন। এ সময় সিহানুক নিলেন চীনে রাজনৈতিক আশ্রয়। ক্ষমতার লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়ল বেচারা সাধারণ মানুষ। সিহানুক যে খুব ভালো শাসক ছিলেন ইতিহাস তেমনটা বলছে না, কিন্তু ফ্রান্সের থেকে স্বাধীনতা বুঝে নেওয়ার কান্ডারি হিসেবে কম্বোডীয় সাধারণ নাগরিকের কাছে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল বইকি। যা হোক, প্রিন্সকে উৎখাতকারী আমেরিকা সমর্থিত সরকারকে মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে রাজি হলো না। এমনিতেই ভিয়েতনামের সীমান্তে আমেরিকার নিয়মিত বোমাবাজিতে কম্বোডিয়ার মানুষ নিয়মিত আহত-নিহত হচ্ছে। ফলে ১৯৭৫ সালে যখন খেমার-রুজরা বিপ্লবের মাধ্যমে লন নলের সরকার উৎখাত করে তখন নমপেন শহরের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে পল পটের বাহিনীর বিপ্লবীদের অভিবাদন জানায় এবং স্লোগান দিতে থাকে। এ ভাগ্যহত মানুষ কখনো হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের জীবনে কী বিভীষিকা নেমে আসছে!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর