শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আল্লাহর রসুল হজরত ঈসা (আ.)

মুহাম্মদ আশরাফ আলী

আল্লাহর রসুল হজরত ঈসা (আ.)। ২ হাজার আগে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে তিনি জন্মলাভ করেন অলৌকিকভাবে। দুনিয়ার প্রথম মানব হজরত আদম (আ.) ও প্রথম মানবী বিবি হাওয়ার জন্ম হয়েছিল কোনো পিতা-মাতা ছাড়াই। তারপর একমাত্র হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম কোনো পিতৃসম্পর্ক ছাড়াই। আল্লাহর কুদরতে পৈতৃক সম্পর্ক ছাড়াই কুমারী মায়ের গর্ভে জন্মলাভ করেন এই নবী। হজরত ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হয় আসমানি কিতাব ইনজিল। হজরত ঈসা (আ.) আগের সব নবী ও আসমানি কিতাবের সত্যায়নকারী এবং সবশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের সুসংবাদ দান করেন। হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন অন্য সব নবী-রসুলের মতোই পবিত্র পুরুষ। আল কোরআনে তাঁর নাম ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে। হজরত ঈসা (আ.)-এর জননী মারিয়ামের নামে কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে মারিয়াম শব্দটি কোরআনে ৩৫ বার উল্লেখ হয়েছে। হজরত ঈসা (আ.)-এর সৃষ্টি হজরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে অনেকাংশে তুলনীয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে নিশ্চয় ঈসা (আ.)-এর দৃষ্টান্ত আদম (আ.)-এর দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেন; এরপর তাকে বলেন “হও”, ফলে সে হয়ে গেল।’ সুরা আলে ইমরান, আয়াত ৫৯।

সুরা মারিয়ামে হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ মারিয়ামের কাছে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাঠান। মানুষের রূপ ধারণ করে সে তার সামনে আত্মপ্রকাশ করে। জিবরাইল মারিয়ামকে বলে, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন। মারিয়াম ফেরেশতাকে বলে, কেমন করে আমার পুত্র হবে, আমাকে তো কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি। আমি ব্যভিচারিণীও নই। জিবরাইল বলে, আল্লাহর কাছে সবকিছুই সহজসাধ্য। কুমারী নারীর গর্ভে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই সন্তান জন্মদান মানুষের জন্য এক নিদর্শন। এটি আল্লাহ-প্রদত্ত অনুগ্রহ এবং স্থিরীকৃত বিষয়। ঈসা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মারিয়াম তার সম্প্র্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলো। তারা কুমারীর মাতৃত্বলাভকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখল এবং বলল তোমার পিতা-মাতা অসৎ কিংবা ব্যভিচারী ছিল না, তুমি এ কোন অদ্ভুত কান্ড  ঘটালে? চারদিকের তীব্র বাক্যবাণে বিপর্যস্ত মারিয়াম তার সম্প্র্রদায়ের লোকদের বলল, তোমরা এ শিশুর কাছে জিজ্ঞাসা কর কেন অদ্ভুত কান্ড ঘটল। লোকেরা বলল, যে কোলের শিশু তার সঙ্গে আমরা কেমন করে কথা বলব? সে সময় শিশু ঈসা মারিয়াম সম্প্রদায়ের সব জিজ্ঞাসার জবাব দেয়। বলে, আল্লাহ তাকে নবী করেছেন।’ আল কোরআনে হজরত ঈসা (আ.)-এর অলৌকিকভাবে জন্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র মহিমময়। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেন, “হও” এবং তা হয়ে যায়।’ সুরা মারিয়াম, আয়াত ৩৫। পুণ্যবতী নারী কুমারী মারিয়ামের গর্ভে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম প্রাকৃতিক নিয়মে অসম্ভব হলেও আল্লাহর কুদরতের কাছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর