রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ

এ চেতনাকে গর্বভরে লালন করতে হবে

দুনিয়াজুড়ে বাংলাদেশের পরিচিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে। পাল আমলে এ ঐতিহ্যকে জাতীয় চেতনার অনুষঙ্গ হিসেবে এগিয়ে নেওয়া হয়। সুলতানি আমলে অনুসৃত হয় অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ। মোগল আমলেও এর ব্যত্যয় হয়নি। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি দখলদারিত্বের সময় দেশের মানুষের উদার চেতনা বিষবাষ্প দিয়ে দূষিত করার চেষ্টা হলেও সফল হয়নি সংগত কারণে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের আত্মপরিচয়ের অনুষঙ্গকে কোনোভাবেই মøান হতে দেয়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এ ভূখন্ডের সব ধর্ম সব বর্ণের মানুষ। স্বাধীনতার পর ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ এমন সাহস ও ঔদার্যের পরিচয় দিতে পারেনি দেশের সব অংশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণে। বড়দিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সংগত কারণেই বলেছেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হতে হবে। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনই ছিল যিশুখ্রিস্টের অন্যতম ব্রত। বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য যিশু নিজেকে উৎসর্গ করেন। জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য মানবেতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন। করোনাভাইরাসে বর্তমানে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এ প্রেক্ষাপটে মহান সৃষ্টিকর্তা দেশ, জাতি তথা বিশ্ববাসীকে মহামারী থেকে যেন মুক্তি দেন এ প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রদায়িক সব অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান এ সময়ে জাতীয় ঐক্যের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের যে কোনো বিকল্প নেই তা মুক্তিযুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে। সে সত্যের অনুসরণে আমাদের যত্নবান থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর