সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসলামে মুয়াজ্জিনের মর্যাদা

মুফতি হেলাল উদ্দিন হাবিবী

ইসলামে মুয়াজ্জিনের মর্যাদা

আজান ইসলামের অন্যতম একটি সৌন্দর্য ও নিদর্শন। আর যে ব্যক্তি আজান দেয়, শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। আজান দেওয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি আমল। কেয়ামতের দিবসে মুয়াজ্জিনগণ বিশেষ মর্যাদাবান হবেন। সেদিন চন্দ্র, সূর্য, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, গাছপালা, পশুপাখি এবং প্রত্যেক প্রাণী ও নিষ্প্রাণ, দুনিয়াতে যাদের কাছে মুয়াজ্জিনের আজান পৌঁছত, তারা সবাই তাঁর জন্য সাক্ষ্য দেবে। মুয়াজ্জিনের জন্য রয়েছে অফুরন্ত নেয়ামত, সুউচ্চ মর্যাদা ও জান্নাতের সুসংবাদ।

মহান আল্লাহ সুরা হা-মিম সেজদার ৩৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা কার? যে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলমান।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ তাফসির ইবনে কাসিরে আল্লামা হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) লিখেছেন, উপরোক্ত আয়াতে মুয়াজ্জিনগণও অন্তর্ভুক্ত। কেননা তাঁরা আজানের মাধ্যমে দৈনিক পাঁচবার মানুষকে মহান আল্লাহর দিকে আহ্বান করেন।

হজরত মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, কেয়ামতের দিবসে মুয়াজ্জিনরাই হবে মানুষের মধ্যে সর্বোচ্চ গর্দান বিশিষ্ট। অর্থাৎ সর্বাধিক সম্মানিত। (মুসলিম)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যদি মানুষ জানত যে, আজান দেওয়া ও নামাজে প্রথম কাতারে দাঁড়ানো কত সওয়াব এবং সঙ্গে এটাও জানত, লটারি ব্যতীত তা লাভ করা সম্ভব নয়, তবে অবশ্যই মানুষ (এ দুটি আমল লাভ করার জন্য) লটারির সাহায্য নিত। (বুখারি)

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় সাত বছর আজান দেবে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সনদ লিখে দেওয়া হবে। (আবু দাউদ, তিরমিযি)

হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ১২ বছর আজান দিয়েছে, তাঁর জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে এবং তাঁর জন্য প্রত্যেক আজানের বিনিময়ে ৬০টি এবং প্রত্যেক ইকামতের বিনিময়ে ৩০টি করে নেকি লেখা হয়। (মুসতাদরাকে হাকেম)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মসজিদের ইমাম হলো মুসল্লিদের জন্য জিম্মাদার এবং মুয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! আপনি ইমামদের সৎপথ প্রদর্শন করুন এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করুন। (তিরমিজি)

সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হলো, আজানের মহিমা অন্তরে লালন করা এবং এর ফজিলত অর্জনে সর্বাত্মক চেষ্টা করা।

লেখক : খতিব, কাজলা (ভাঙ্গাপ্রেস), যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর