বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা যাঁদের প্রাপ্য

মেজর মো. আখতারুজ্জামান (অব.)

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে সম্মাননা যাঁদের প্রাপ্য

বাংলাদেশ এ বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অত্যন্ত গর্ব ও মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করতে যাচ্ছে। যদিও সমগ্র দেশ ও বিশ্ব এখন ভয়াবহ কভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে ১৮ লাখের বেশি আর বাংলাদেশে ৭ হাজারের বেশি মানুষ কভিড-১৯ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছে। তার পরও কভিড-১৯-এর ভয় উপেক্ষা করে দেশবাসী স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। যার অংশ হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং স্বাধীনতার পক্ষের অন্যতম বৃহৎ জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি যথাযথ গৌরব ও মর্যাদার সঙ্গে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্বের একটি নবীন দেশ। যেখানে পৃথিবীতে হাজার বছরের বেশি বয়সের অনেক দেশ ও রাষ্ট্র তাদের ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে আধুনিক উন্নত বিশ্ব গঠনে অবদান রেখে চলেছে। সেখানে ৫০ বছরের বাংলাদেশও তার নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে। বাংলাদেশও ছিল হাজার বছরের ঐতিহ্য ও গৌরবের দেশ। বাংলাদেশ মূলত ভারতবর্ষের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ বা রাজ্য ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ২৬৯ থেকে ২২৯ পর্যন্ত সম্রাট অশোক দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ছাড়া ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেছেন। সম্রাট অশোকের যুুগের পর তাঁরই ধারাবাহিকতায় ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় পাল বংশের সূচনা হয় এবং তারা মূলত বৌদ্ধধর্মের মহাযান ও তান্ত্রিক সম্প্রদায়ের অনুগামী ছিল। ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে গৌড়ে গোপাল প্রথম সম্রাট হিসেবে পাল সাম্রাজ্যের পত্তন ঘটান। বাংলা ও বিহার ভূখন্ড ছিল পাল সাম্রাজ্যের প্রধান কেন্দ্র এবং দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত ছিল পাল সাম্রাজ্যের রাজত্বকাল। পাল সাম্রাজ্যের পাশাপাশি ৯০০ খ্রিস্টাব্দের আগে ভারতবর্ষে সেন বংশের গোড়াপত্তন হয় এবং একাদশ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে পাল বংশকে পরাজিত করে সেন বংশ বাংলায় তাদের শাসন বিস্তার করে। সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ভারতের কর্ণাটক। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলেও বিশেষত উত্তর ভারত, হিমাচল ও নেপালে সেন বংশের রাজত্ব ছিল। সেনদের আগমনের আগে এ অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের প্রাধান্য ছিল। সেন রাজারা ছিলেন গেঁাঁড়া হিন্দু। তাই তাদের শাসনামলে বাংলায় হিন্দুধর্ম রাজ-পৃষ্ঠপোষকতা পায়। দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে সেন রাজাদের শাসন শেষ হলে বাংলায় তুর্কি শাসন শুরু হয়। ১২০০ থেকে ১২০৩ সাল নাগাদ ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি প্রথমে বিহার ও পরে বাংলায় মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৩০০ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর হাত ধরে এ দেশে মুসলমান সমাজ গড়ে ওঠে এবং ব্যাপকভাবে হিন্দুধর্ম থেকে ইসলামে দীক্ষিত হয়। পরে ভারতের পূর্বাঞ্চলের সব এলাকা তথা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা মোগল সাম্রাজ্যের অধীন মুসলিম শাসিত সুবা বা প্রদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে জয়ী হয়ে ব্রিটিশ বেনিয়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা দখল করে নেয়। সে সময় সমগ্র আসাম বাংলার অংশ ছিল। ১৮৫৭ সালে ভারতব্যাপী সিপাহি বিদ্রোহের জেরে ইংল্যান্ডের ব্রিটিশ সরকার মোগল সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়ে সমগ্র ভারত দখল করে নেয়। ১৮৫৭ সালের পরই সমগ্র ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের ফলে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ব্রিটিশের কায়েমি স্বার্থ ও সাম্রাজ্যবাদী প্রভাব ধরে রাখার হীনস্বার্থে ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দ্বিজাতিতত্ত্ব উসকে দিয়ে ভারতবর্ষ ভারত ও পাকিস্তান এ দুই রাষ্ট্রে ভাগ করে দেওয়া হয়। এ দ্বিজাতিতত্ত্বের ধুয়া তুলে বাংলাকেও ভাগ করে পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শুধু তাই নয়, আসামকে পূর্ব বাংলার বাইরে রাখা হয়। পূর্ব বাংলা, পশ্চিম পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ তথা বর্তমান পাখতুনখোয়া নিয়ে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠন করা হয়; যা ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু সে পাকিস্তানের ৫৪ ভাগ জনসংখ্যা পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের হওয়ার পরও দেশটির রাজধানী পূর্ব বাংলায় না হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে হয় এবং শাসনভার পশ্চিম পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব বাংলার জনগণের ভাষা বাংলা বাদ দিয়ে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্ব বাংলার জনগণ তা মেনে নেয়নি এবং পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর সেই ঘৃণ্য ঘোষণা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রতিহত করা হয়। তার পরই পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে দানা বেঁধে ওঠে স্বাধীনতার চেতনা ও জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণের প্রয়োজনে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রত্যাশা। তারই ধারাবাহিকতায় ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ছয় দফা আন্দোলন, পাকিস্তানের শাসক আইয়ুব শাহির পতনের ’৬৯-এর ছাত্র আন্দোলন, শেখ মুজিবুর রহমানকে আইয়ুব শাহির কারাগার থেকে মুক্ত করে এনে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দান, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানীর অব্যাহত আন্দোলন, ’৭০-এর জাতীয় নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিজয় বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের পটভূমিকা তৈরি করে। স্বাধীনতার পটভূমিকায় আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (মোজাফফর), ন্যাপ (ভাসানী) ও কমিউনিস্ট পার্টি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বাংলার জনগণের স্বাধীনতার চেতনায় অগ্নিস্ফুলন ঘটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৫ মার্চ, ’৭১-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া এবং ঢাকাসহ বাংলাদেশে নিরীহ জনগণকে রাতের অন্ধকারে ব্যাপক হারে হত্যার মাধ্যমে। স্বাধীনতাযুদ্ধের পটভূমিকায় ২৭ মার্চ, ’৭১-এ চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান ঘোষণা দিয়ে মৃত্যুকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম (আংশিক), দ্বিতীয়, চতুর্থ ও অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সব বাঙালি সৈনিক ও অফিসার, ইপিআর ও পুলিশের সাধারণ সদস্য এবং কিছু অফিসার, পাকিস্তান প্রশাসনের কিছু তরুণ কর্মকর্তাসহ সমগ্র দেশের ছাত্র ও যুবক, শ্রমিক বিশেষ করে গ্রাম বাংলার কৃষকের তরুণ ছেলেরা। এ ছাড়া পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে আসেন অনেক অফিসার ও সৈনিক। বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে অনেক বাঙালি যুবক। অংশগ্রহণ করে অনেকন শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, ক্রীড়াবিদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও মন্ত্রিপরিষদ এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সশস্ত্র বাহিনী প্রধান কর্নেল ওসমানী ও বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধরত সেক্টর কমান্ডাররা।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিরাট অবদান রাখে ভারতের জনগণ বিশেষ করে ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ পূর্ব বাংলার ১ কোটি শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ অবদান রাখেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমস্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। মুক্তিযুুদ্ধে সরাসরি অবদান রাখেন ভারতের কংগ্রেসের নেতৃত্বে তৎকালীন ভারতীয় সরকার এবং ভারতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ভারতের সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান জেনারেল (পরে ফিল্ড মার্শাল) মানেকশর নেতৃত্বে ভারতের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী একযোগে সশরীরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তাদের জীবন ও রক্তে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে সফল ও গৌরবান্বিত করে। এ ছাড়া তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া জাতিসংঘে স্থায়ী নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে নিরাপদ রেখেছিল। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে থেকে অনেক বুদ্ধিজীবী স্বাধীনতার চেতনা উজ্জীবিত রাখতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে মওলানা ভাসানী, মোজাফফর আহমদ, কমরেড মণি সিং এবং ভাসানী ন্যাপ, মোজাফফর ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে।

বিএনপির পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যাঁদের অবদানে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাঁদের সম্মাননা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার জন্য দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্থায়ী কমিটির সব সদস্যকে আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে সম্মাননা উপকমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তমকে সম্মাননা প্রদান কার্যক্রম শুরু করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যাঁর যাঁর অবদান বিবেচনা করে নিম্নলিখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা সনদ ও মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়ার একটি প্রস্তাব আমার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সদয় বিবেচনার জন্য নিম্নে উপস্থাপন করলাম :

১। মুক্তিযুদ্ধ ও সব মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

২। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে।

৩। বেগম ফজিলাতুন নেছাকে বাংলাদেশের স্থপতিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য।

৪। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য।

৫। দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকে সহযোগিতা করার জন্য।

৬। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদসহ প্রবাসী সরকারের সব সদস্যকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য।

৭। মওলানা ভাসানী, মোজাফফর আহমদ, কমরেড মণি সিং এবং আওয়ামী লীগ, ভাসানী ন্যাপ, মোজাফফর ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টিকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য।

৮। কর্নেল (পরে জেনারেল) আতাউল গনি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া জন্য।

৯। মুক্তিযুদ্ধকালীন সব সেক্টর কমান্ডারকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অংশগ্রহণ ও অবদানের জন্য।

১০। মুক্তিযুদ্ধে প্রাপ্ত সব বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম, বীরপ্রতীকসহ সব প্রতীকধারী মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্য।

১১। ভারতের বিশেষ করে ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য।

১২। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁর ঐতিহাসিক অবদানের জন্য।

১৩। ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিংসহ মন্ত্রিপরিষদের সব সদস্যকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁদের সাহায্য ও সহযোগিতা দানের জন্য।

১৪। ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও তদ্বীয় সরকারকে শরণার্থী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য।

১৫। ফিল্ড মার্শাল মানেকশকে তাঁর অধীন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী নিয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ অবদান রাখার জন্য।

১৬। ভারতের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বাহিনীসমূহের যেসব সৈনিক ও অফিসারের জীবন এবং রক্তে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাঁদের আত্মত্যাগের কারণে।

১৭। সোভিয়েত রাশিয়া তথা তার উত্তরসূরি বর্তমান রাশিয়ার সরকার ও জনগণকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য।

১৮। ১৪ ডিসেম্বর, ’৭১-এ নিহত সব বুদ্ধিজীবীকে।

১৯। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণকে।

আশা করি, দল আমার এ প্রস্তাবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

 

 

            লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সদস্য, স্বাধীনতার ৫০ বছর

পূর্তির সম্মাননা উপকমিটি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।

সর্বশেষ খবর