বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ

অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে

অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগকে বৈধতাদানের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় এ বছর রেকর্ডসংখ্যক করাদাতা তাদের অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করে বৈধ করার সুযোগ নিয়েছেন। এর ফলে দেশের ব্যক্তিশ্রেণির ৭ হাজার ৪৪৫ করদাতা তাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণীতে অপ্রদর্শিত আয়ের ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা প্রদর্শন করেছেন। বিপরীতে এসব করদাতা সরকারি কোষাগারে আয়কর পরিশোধ করেছেন প্রায় ৯৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা দেশের অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্তাব্যক্তিদের মতে দেশের ইতিহাসে কোনো একক অর্থবছরে এত অপ্রদর্শিত অর্থ প্রদর্শনের রেকর্ড নেই। তাদের প্রত্যাশা- অর্থবছর শেষে এ আয় প্রদর্শনের হার আরও অনেক বাড়বে। এনবিআর চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস বা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলের তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, করদাতাদের রিটার্ন বেড়েছে ৯ শতাংশ। আর অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের যে বিশেষ সুযোগ দিয়েছে তাতে অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন করদাতারা। অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার যথার্থতা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এ সুযোগ সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে যেমন অবদান রাখবে তেমন বিনিয়োগ ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। প্রদর্শিত অর্থ বিদেশে পাচার কিংবা অপখাতে ব্যবহারের বদলে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যবহৃত হওয়ায় তা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। স্মর্তব্য, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ জমি, ফ্ল্যাট, বিল্ডিং ও অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার, বন্ড বা অন্য কোনো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়। বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সঙ্গে ভবন নির্মাণ খাতের সম্পর্ক থাকায় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ফল রাখবে বলে আশা করা যায়। করোনাকালে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতেও রাখবে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান।

সর্বশেষ খবর