বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতা

কর্মকর্তাদের অযোগ্যতা হিসেবে দেখা হোক

বাংলাদেশের বাজেটের সিংহভাগ ব্যয় হয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে। সাদা হাতির সঙ্গে তুলনা করা যায় সরকারি কর্তাব্যক্তিদের একাংশকে। যারা জনগণকে সেবা দেওয়ার বদলে নিজেদের পকেট পূর্তির দিকে বেশি নজর দেন। জাতীয় বাজেটের এক-পঞ্চমাংশ কিংবা তারও কম ব্যয় হয় উন্নয়ন খাতে। কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়নে কর্তাব্যক্তিদের একাংশ নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের দরকষাকষিতে এতই ব্যস্ত থাকেন যে সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এক টাকার প্রকল্প সময় ক্ষেপণের কারণে তিন-চার টাকায় বাস্তবায়নের নজিরও কম নয়। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে একনেকের বৈঠকে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেও লজ্জাহীনদের মধ্যে ন্যূনতম চক্ষুলজ্জাও সৃষ্টি হয়নি। গত মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় বারবার বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ শুধু নয়, এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়। কিন্তু সময়মতো শেষ করতে না পারায় এক বছর পর আরও দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর ২০১৬ সালে প্রকল্পটি সংশোধন করে ৬১১ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় করার পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাবে একনেক অনুমোদন দেয়। তাতেও কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়িয়ে ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ওই প্রকল্পের মেয়াদ বারবার বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। একনেকের বৈঠকে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা আশা করব প্রকল্প বাস্তবায়নে কেন বিলম্ব হলো, এ জন্য কারা দায়ী তা চিহ্নিত করা হবে। ভবিষ্যতে প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের ব্যর্থতাকে সংশ্লিষ্টদের অযোগ্যতা হিসেবে দেখা হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর