শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

টিকা এবং টিপ্পনী

সৈয়দ বোরহান কবীর

টিকা এবং টিপ্পনী

জ্যোতিষশাস্ত্রে মানুষের আগ্রহ অপরিসীম। মানুষ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক, ভবিষ্যৎ গণনায় নিজের জীবন কেমন জানতে পছন্দ করে। জ্যোতিষীরাও রাশিচক্র মিলিয়ে আশার বাণী শোনান। আজকের রাশিফল তাই সব গণমাধ্যমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অর্থ প্রাপ্তির ভবিষ্যদ্বাণীতে অনেকে পুলকিত হন। প্রেম-রোমাঞ্চের সুখবরে শিহরিত হন প্রায় সবাই। রাশিচক্রের ভাগ্যগণনা করা ও ভালো-মন্দ মিলিয়ে আজকের দিনটি কেমন যাবে তার বিবরণ উপস্থাপন করেন। সত্য হোক আর না হোক এ গণনা ক্ষণিকের জন্য হলেও আমাদের তৃপ্তি দেয়।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে আমার একজন জ্যোতিষী বা গণক মনে হয়। করোনা মহামারীর সময় থেকে আমার মধ্যে এ ধারণা আরও তীব্র হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্তমান নিয়ে কথা বলেন কম, ভবিষ্যদ্বাণী করেন ঢের বেশি। এই যেমন গত বছর উহানে যখন করোনা ছড়িয়ে পড়ল তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানালেন ‘আমাদের দেশে করোনা প্রকোপ খুব একটা হবে না।’ দেখুন কি আশ্চর্য ভবিষ্যদ্বাণী! করোনায় সারা বিশ্ব যখন নাকানি-চুবানি খাচ্ছে তখন বাংলাদেশের মানুষ জনারণ্যে মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে পান চিবুচ্ছে। গত আগস্টে আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, ‘টিকা ছাড়াই দেশের মানুষ করোনা থেকে মুক্তি পাবে।’ দেখুন, কি অদ্ভুত ভবিষ্যদ্বাণী! বাংলাদেশে টিকার কোনো খবর নেই কিন্তু করোনা এখন সর্দি-কাশির পর্যায়ের একটি রোগে পরিণত হয়েছে। করোনা নিয়ে মানুষ ভাবে না। এ দেশের মানুষ বাসে, লঞ্চে, ট্রেনে গাদাগাদি করে চলছে। হোটেলে খাচ্ছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। করোনা এখন কিছু সংখ্যাতত্ত্বের হিসাব মাত্র। এই ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পুরস্কৃত করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমরা করিনি। এটা আমাদের দীনতা, সংকীর্ণতা। আমরা স্বীকৃতি দিলাম কি দিলাম না, কী আসে যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজের প্রশংসা নিজে গ্রহণ করতে মোটেও কার্পণ্য করেন না। গুণীজনরা বলেন, নিজের ঢোল নিজেকেই পেটাতে হয়, অন্যকে দিলে তা ভেঙে ফেলে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুণীজনদের কথা শোনেন। তাই করোনা নিয়ে তাঁর সব ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হওয়ায় নিজেই নিজেকে সংবর্ধিত করেছেন। বিশ্ব যখন টিকা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছে ঠিক সেই সময় করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য নিয়ে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফেলেন। ওই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরাসহ আলোচকরা তাঁকে ধন্য ধন্য করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিটি মিটি তারার মতো পুলকিত হন। হবেন না কেন! মানুষ মাস্ক কেলেঙ্কারি ভুলে গেছে, পিপিইর আকাশচুম্বী দাম নিয়ে এখন কেউ কথা বলে না। রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদ কে ছিল যেন? আর ওই যে ডা. সাবরিনা আর তাঁর স্বামী (বিতর্কিত) কী যেন করেছিল?- এসব এখন ধোঁয়াটে, ঝাপসা। কবি নাজিম হিকমত বলেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীতে মানুষের শোকের আয়ু বড়জোর এক বছর।’ আর ওই শতাব্দীতে মানুষের স্মরণশক্তি মাত্র কয়েক দিন। তাই মানুষ স্বাস্থ্যের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের অপকর্ম ভুলে গেছে, সাবেক সচিব আসাদুল ইসলামের সঙ্গে সাহেদের সম্পর্ক নিয়ে খোঁজ নেবে না। ডা. ইকবাল কবীরকে কীভাবে এত দুর্নীতি ও লুটপাটের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করবে না। একদিন এ দেশের মানুষ ভুলে যাবে করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতে কি ভয়াবহ ও ভয়ংকর দুর্নীতি হয়েছিল। কীভাবে পরীক্ষা না করেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল। একদিন এ দেশের মানুষ ভুলে যাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি আর অপকর্ম ঠেকাতে সব দায়িত্ব নিজে নিয়েছিলেন। নির্ঘুম কত রাত কাটিয়েছিলেন শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে। কীভাবে তিনি দুর্নীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত সিএমএসডিতে আবু হেনা মোরশেদ জামানের মতো একজন সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে মো. আবদুল মান্নানের মতো একজন নীতিমান, কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর মানুষকে স্বাস্থ্যসেবায় সচিব পদে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এ দেশের মানুষ মনেও রাখবে না ওই সচিব দায়িত্ব গ্রহণ করেই তাঁর প্রিয়তম স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন। সেই শোক চাপা দিয়ে তিনি মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতির ডাস্টবিন থেকে তুলে এনেছিলেন। মানুষ ভুলে যাবে কোন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মতো একজন ধৈর্যশীল মানুষ স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাটুকার মহাপরিচালককে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের মতো অচেনা, আনকোরা, সৎ মানুষকে খুঁজে এনে মহাপরিচালক বানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীই জানতেন এই লোকটি পারবেন। শেখ হাসিনা নিপুণ হাতে স্বাস্থ্য খাতকে সঠিক পথে নিয়ে এসেছিলেন, এ কথা কে বলবে? কজন মনে রাখবে? বরং স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেকে আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত করলে তিনি ‘অমর’ হবেন। কিন্তু তিনি কি অমর হবেন তাঁর কাজের জন্য না তাঁর ভবিষ্যৎ গণনার জন্য? এ প্রশ্ন ভবিষ্যতের কোলেই লুকিয়ে থাক। আমরা বরং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সর্বশেষ বাণী নিয়ে একটু চর্চা করি। পাকা গণকের মতো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শেষ ভষিষ্যদ্বাণীর দুটি সংস্করণ আছে। প্রথম সংস্করণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ করোনার টিকা পাবে।’ দ্বিতীয় সংস্করণ একটু পরিমার্জিত এবং সংশোধিত। দ্বিতীয় দফায় তিনি বলেছেন, ‘জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে করোনার টিকা চলে আসবে।’ বিজ্ঞান ও ভবিষ্যদ্বাণীর (গণকগিরি) মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বিজ্ঞান চলে যুক্তি, তথ্য, তত্ত্ব এবং উপাত্ত দিয়ে। আর গণকবাণী হলো অদৃষ্টের মধ্যে অস্পষ্ট লেখা, সংকেত আবিষ্কার। এর সঙ্গে যুক্তি নেই, পরিসংখ্যান নেই, তথ্য-উপাত্ত নেই। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের টিকা প্রাপ্তিসংক্রান্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য তাই একজন জ্যোতিষীর ভবিষ্যৎ আবিষ্কার। চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নয়। ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি করোনার টিকা নিয়েও কিছু বলেন। বলেন, ‘আমরা দ্রুত করোনার টিকা আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’ এটি হলো বিজ্ঞানমনস্ক বক্তব্য। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টিকা প্রদানের দিন-ক্ষণ ঘোষণা হলো গণকবাবার দিব্যদৃষ্টিতে প্রাপ্ত তথ্য। এখন আমরা দেখতে চাই আমাদের ভবিষ্যদ্বক্তা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ ভবিষ্যদ্বাণী কতটা সফল হয়।

টিকা নিয়ে আসলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী করেছেন যাতে তিনি নিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারির শুরুতে আমরা টিকা পাব? এ মুহূর্তে সারা বিশ্বের ১০৭টি দেশে করোনার টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলছে। এখানে একটি কথা বলে রাখি, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একটি ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়নি। (জ্যোতিষীদের সব ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হবে কে বলেছে? দু-একটা সত্য হলেই তাঁর পসার জমে যায়)। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিশ্বে করোনার টিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পাবে।’ কিন্তু বাংলাদেশ পাবে বলে ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি’ লিখলে তো আর করোনার টিকা বৃষ্টির অঝোর ধারার মতো ঝরবে না। এ জন্য কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে করোনার টিকা পাওয়ার জন্য আসলে কী করেছেন? বেশ কয়েক মাস আগের ঘটনা। বিএমআরসির (বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী টেলিফোন করলেন। বয়সে প্রবীণ হলেও এখনো তিনি তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরপুর একজন মানুষ। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি জানালেন, চীনে সিনোভ্যাক তাদের করোনা টিকার তৃতীয় পর্যায়ে ট্রায়াল বাংলাদেশে করতে চায়। এটা মানবদেহে ট্রায়াল। এ ট্রায়াল করলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবে। খুবই আশার কথা। তিনি জানালেন, বিএমআরসি এ ট্রায়ালের ইথিক্যাল বা নৈতিক অনুমোদন দিয়েছে। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেই ট্রায়াল শুরু হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ওই ফাইল ঘুমিয়ে পড়ল। এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিতে বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলো। তিনি জানালেন, এটা অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কেন? এরপর মন্ত্রী দৃপ্ত পায়ে সংবাদ সম্মেলনে এলেন। তিনি গর্বিত ভঙ্গিতে জানালেন, ‘সিনোভ্যাককে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হবে।’ তত দিনে দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। দেড় মাস কেউ অনুমতির জন্য বসে থাকে? সিনোভ্যাক জানিয়ে দিল, বাংলাদেশে আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া তাদের পক্ষে এ ট্রায়াল সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও প্রচেষ্টায় অক্সফোর্ড আবিষ্কৃত এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও সেরাম উৎপাদিত টিকা আনার একটি দৃশ্যমান পরিকল্পনা নেওয়া হলো, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ত্রিপক্ষীয় চুক্তিও করল। এখন এটাই বাংলাদেশে টিকা প্রাপ্তির একমাত্র পথ। এ নিয়ে ধূম্রজাল, আশ্বাস আর কথার বাহাস চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শুধু একটি উৎস থেকে টিকা আমদানির সিদ্ধান্ত কতটা বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণ?

চীনা টিকার কথা বাদই দিলাম। ফাইজার যখন টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে এগিয়ে গেল তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী করলেন? ফাইজারের স্থানীয় (বাংলাদেশে) বিপণন প্রধান হলো রেডিয়েন্ট ফার্মা। রেডিয়েন্ট ফার্মার প্রধান আমাকে জানিয়েছেন, তিন মাস আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তাঁরা চিঠি দিয়ে টিকার কথা জানান। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগ্রহ দেখায়নি। বলা হচ্ছে, ফাইজারের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়, এটার সক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়ার পর কোনো বিষয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে বড্ড হাসি পায়, রাগ হয়। যে দেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পারে সে দেশ নিজস্ব প্রযুক্তিতে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রার সংরক্ষণ ফ্রিজ বানাতে পারবে না- এমন কথা যারা বলেন তারা আসলে গণশত্রু। মডার্নার সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোনো যোগাযোগ করেছেন? রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক পরীক্ষিত। মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম সহযোগী। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে রাশিয়া বিরাট ভূমিকা পালন করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের তরুণদের উচ্চশিক্ষার জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় রাশিয়া এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে যারা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তাদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের স্থান। বিশ্বে ১২টি টিকা একক আবিষ্কারের কৃতিত্ব রাশিয়ার। রাশিয়া যখন স্পুটনিক টিকা আবিষ্কার করল তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী করলেন? রাশিয়ার টিকায় আমাদের এত অনাগ্রহ কেন? অথচ পাশের দেশ ভারতও রাশিয়ার টিকার জন্য আগাম চুক্তি করে রেখেছে।

মোদ্দা কথা, করোনার টিকার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী অদৃষ্টের ওপর নির্ভর করে ছিলেন। এটাই হলো জ্যোতিষবিদ্যার প্রথম কথা। আর তাই শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভবিষ্যদ্বাণী সফল হয় কি না তা বলার মতো কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য আমাদের হাতে নেই। এর পরও আশার কথা, আমাদের একজন অসাধারণ বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী আছেন। তিনি কখনো হাল ছাড়েন না। শেষ পর্যন্ত যদি আমরা টিকা পাই তা হবে তাঁর একক উদ্যোগের ফল। আর তখন নিশ্চয়ই স্বাস্থ্যমন্ত্রী দ্রুততম সময়ে টিকা আনার কৃতিত্ব দাবি করবেন। এ জন্য একটা সংবর্ধনাও তাঁকে দেওয়া হবে। তখন তিনি মুচকি হেসে বলতেই পারেন, ‘বলেছিলাম না, আমি সব জানি।’

টিপ্পনী : শেষ পর্যন্ত যদি সেরামের টিকা বাংলাদেশে অল্প কিছু দিনের মধ্যে আসে, তাহলে বলতেই হবে আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী একজন পাকা জ্যোতিষী। আর যদি না আসে তাহলে বুঝতে হবে এটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এতে কীই-বা করার আছে।

লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত।

[email protected]

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর