শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ট্রাম্প সমর্থকদের তান্ডব

কর্তৃত্ববাদ প্রত্যাখ্যান করতে হবে

যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় সভ্য মানুষের দেশ। জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিঙ্কনের মতো মহান রাষ্ট্রনেতা এ দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। কর্তৃত্ববাদী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ পর্যন্ত ছোটখাটো বিচ্যুতি ছাড়া দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র তার পরিচ্ছন্ন গণতান্ত্রিক ও মানবিক ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করেছে। ট্রাম্পের আমলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চেতনা ব্যাহত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে বিপুলভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সে দেশের মানুষ। নির্বাচনে সংশয়াতীতভাবে প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী বাইডেনের বিজয়লাভ সত্ত্বেও তা মেনে নিতে অস্বীকার করে ট্রাম্প যে হীনমন্যতা দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তার দ্বিতীয় কোনো নজির নেই। গত বৃহস্পতিবার ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বানচাল করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উস‹ন্ডে দেওয়া উগ্র সমর্থকরা মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ক্যাপিটল ভবনে যেভাবে হামলা চালিয়েছেন তা অপ্রত্যাশিতই শুধু নয়, এই মহান দেশটির ভাবমূর্তির জন্যও কলঙ্ক লেপন করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নব্য ফ্যাসিবাদীদের রোধ করতে গুলি চালাতে বাধ্য হয় এবং তাতে অন্তত চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনে কারফিউ জারি ও দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সীমাহীন সহিংসতা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে কংগ্রেসের যৌথসভায় নতুন প্রেসিডেন্টের জয়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও তাতে সায় দিয়েছেন। কংগ্রেসের যৌথসভা বাইডেনের জয় অনুমোদন করার পর ট্রাম্প ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়েছেন। তাঁর এ শুভবুদ্ধি নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। যুক্তরাষ্ট্রে অসহিষ্ণুতার থাবা বিস্তার গণতন্ত্রের জন্য বিসংবাদ ডেকে এনেছে। আমাদের প্রত্যাশা, দুনিয়াবাসী এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবে এবং কোথাও যাতে কর্তৃত্ববাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে।

সর্বশেষ খবর