সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রণোদনা প্যাকেজ

ব্যাংকিং খাতের দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপর্যস্ত অর্থনীতির গতি ফেরাতে ব্যাংকগুলোকে ঋণ সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা দিলেও উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগই সুবিধা পাননি। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে ব্যাংকগুলোকে বেশ কিছু সুবিধাও দেওয়া হয়। সেই সুবিধা নিয়ে নিজেদের আর্থিক অবস্থান সুসংহত করেছে ব্যাংকগুলো। নগদ মুনাফা তুলতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। ঋণফেরত না পাওয়ার আশঙ্কার কথা বলে উদ্যোক্তাদের বঞ্চিত করেছে। যে কারণে করোনায় সরকার ঘোষিত ঋণ সহায়তার প্যাকেজ ফলপ্রসূ হয়নি এমন অভিমত বিশেষজ্ঞদের। বাড়তি তারল্যের জোগান নিশ্চিত হওয়ায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে নগদ মুনাফা তুলছে ব্যাংকগুলো। এই সুবাদে এমনকি বন্ধ হওয়ার উপক্রম ছিল এমন ব্যাংকও এখন ভালো অবস্থায় পৌঁছেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা না দিয়ে ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ার সমালোচনা হচ্ছে। এ খাতের ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর টালবাহানা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা যথাসময়ে ঋণ না পাওয়ায় প্রণোদনার প্রত্যাশিত সুফল মেলেনি। হাতে গোনা বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে মুখ দেখে ঋণ দেওয়া হয়েছে। মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ঋণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের সক্রিয় করা দরকার। ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোকে আগ্রহী করতে খেলাপি করার সময় বাড়ানো, প্রভিশন কমানোসহ নানা ছাড় দেওয়া হয়েছে। করোনার অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বড় শিল্প ও সেবা খাতের জন্য চলতি মূলধন বাবদ ৩০ হাজার কোটি টাকা ও এসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা। এসব ঋণের সুদের অর্ধেক পরিশোধ করবে সরকার, বাকি অর্ধেক গ্রাহক। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ও এর সুফল দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোর যেভাবে দায়িত্ব পালন করার দরকার ছিল তা তারা পারেনি। ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখলেই বরং দেশের অর্থনীতির জন্য লাভ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর