রবিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

চালের দামে অস্বস্তি

চালকল মালিকদের সামাল দিন

চালের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের চালবাজি থামছে না। দেশে পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে কৃত্রিম সংকট জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। এর ফলে ক্রেতাদের বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে চালকল মালিকদের অশুভ সিন্ডিকেটের তৎপরতা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। প্রতি বছর ধান ওঠার আগে দরপতন ঘটিয়ে কৃষককে কম দামে উৎপাদিত পণ্য বিক্রিতে বাধ্য করা হয়। তারপর চালকল মালিকরা যা ইচ্ছা তাই করার সাহস পায়। সরকার কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের নামে প্রতি বছর যে ধান-চাল সংগ্রহ করে তার সুফলও ভোগ করেন মিল মালিকরা। কারণ কৃষক নয় মূলত ধান-চাল কেনা হয় মিল মালিকদের কাছ থেকে। ফলে কৃষককে প্রণোদনা দেওয়ার নামে সরকারি অর্থেরই অপচয়ই শুধু হয়। ন্যায্যমূল্য দূরের কথা অনেক সময় কৃষক উৎপাদন খরচও ওঠাতে পারে না ধান বিক্রি করে। এ অবস্থার অবসানে কৃষক সমবায় গড়ে তুলে প্রতিটি গ্রামপর্যায়ে ধান-চালসহ অন্যান্য ফসল সংরক্ষণের সুবিধা সৃষ্টির কথা ভাবা যেতে পারে। কৃষক থেকে সরাসরি ধান-চাল কেনার প্রক্রিয়াও জোরদার করতে হবে। কৃষককে ধান চাষে উৎসাহিত করতে চাষাবাদের খরচ কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে গবেষণা চালানো প্রয়োজন। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে যান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করা গেলে উৎপাদন খরচ অনেকাংশে কমে আসবে। ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে তাদের প্রধান খাদ্যপণ্য কিনতে সক্ষম হবে। খাদ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধেরও উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সফল হলে উপকৃত হবে উৎপাদক ও ভোক্তারা। বাজারে চালের বাড়তি দামের কারণ উদঘাটনে যথাযথ তদন্ত হওয়াও জরুরি। চালের উৎপাদন ও মজুদ সম্পর্কে সঠিক পরিসংখ্যান যাতে সরকারের হাতে আসে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট থাকায় সরকারের পক্ষেও অনেক সময় প্রকৃত তথ্য জানা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর