রবিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দখল দূষণের মচ্ছব

নদ-নদী রক্ষায় আর অবহেলা নয়

এক বছরে সারা দেশের নদী দখলদারদের মাত্র ৩৩ শতাংশ উচ্ছেদ করা গেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বলেছে, উদ্ধারকাজ প্রত্যাশিত পর্যায়ে হয়নি। নানামুখী চাপে অনেক জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান বেশি দূর এগোয়নি। আবার একই অববাহিকা অঞ্চলের সব নদীতে একসঙ্গে অভিযান না হওয়ায় উচ্ছেদের সুফলও আসেনি। দখলমুক্ত করার পর অনেক জায়গা ইতিমধ্যে আবারও অবৈধ দখলে চলে গেছে। সেখানে অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত দেশের আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম উচ্ছেদ হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। আর সবচেয়ে বেশি ঢাকায়। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সারা দেশে ৫৭ হাজার ৩৯০ জন অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করেছে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন। ঢাকার তুরাগ, বালু, বুড়িগঙ্গা নদীও দিন দিন অস্তিত্ব হারাচ্ছে। দখল, দূষণ আর নাব্য সংকটই এর মূল কারণ। তবে শুধু নদ-নদীর ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টি করে অস্তিত্ব ফিরে পাওয়া যাবে না। প্রথমে দূষণ রোধ, এরপর দখল ও সরাসরি প্লাস্টিক বর্জ্য নদ-নদীতে না ফেলার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনকে নদীরক্ষায় উচ্ছেদ ও উদ্ধার, পানি ও পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হলেও প্রায়োগিক আইনি ক্ষমতা ও প্রয়োজনীয় জনবল, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় জেলা-উপজেলা প্রশাসন, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদফতরের ওপরই নির্ভর করতে হয়েছে। কালেক্টর, রাজস্ব কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটিএ নদ-নদীর জমি ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানকে লিজ, দখল হস্তান্তর করেছে, তাদের দ্বারা উচ্ছেদ বা উদ্ধারকাজ শুরু করানো গেলেও প্রত্যাশিত পর্যায়ে সুফল অর্জিত হয়নি। কমিশনের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও অবস্থার প্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়নি। ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, নদ-নদীগুলোর অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। নদ-নদী দখল-দূষণের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর