সোমবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পৌর নির্বাচন

সহিংসতা দুর্ভাগ্যজনক

দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬০টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শনিবার। প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও বিচ্ছিন্নভাবে ঘটেছে সহিংসতার ঘটনা। একজন নবনির্বাচিত কাউন্সিলরকে কুপিয়ে হত্যার মতো নজিরবিহীন ঘটনাও ঘটেছে নির্বাচন শেষে। ঘটেছে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা। ব্যালট পেপার-বাক্স ছিনতাই ও কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার বের করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বেশির ভাগ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে। নির্বাচনে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে ৬০টি উপজেলার মেয়র পদের ৪৬টিই পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকি ১৪টির মধ্যে ৮টিতে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। যাদের মধ্যে ছয়জন আওয়ামী লীগ ও দুজন বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়েছেন। অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি সর্বসাকুল্যে একটি ও জাসদ একটি মেয়র পদ পেয়েছে। নির্বাচনে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার বিপুল জয় ছিল আলোচিত ঘটনা। এ পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী দেয়, জামায়াতে ইসলামীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্বতন্ত্রভাবে। কাদের মির্জা সারা দেশে আলোচিত হয়ে ওঠেন নিজ দলের সিনিয়র নেতাদের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে তির্যক বক্তব্য রেখে। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না তা নিয়েও তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। তবে বসুরহাটে নির্বিঘ্নে এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিপক্ষের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন কাদের মির্জা। সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা। পৌর নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। সরকারি দলের প্রায় একতরফা জয় নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি করেছে। তবে এ একতরফা জয় হয়েছে কারচুপি নয়- বিরোধী প্রার্থী ও কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য। এ নিষ্ক্রিয়তা গণতন্ত্রের জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে।  স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অবস্থান বরাবরই ভালো। তারপরও বিরোধীদলীয় প্রার্থী ও সমর্থকরা নির্বাচনে সক্রিয় হলে তারা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারতেন। গণতন্ত্রের জন্যও তা সুসংবাদ  বলে বিবেচিত হতো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর