মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র

ফিরে পাক হারানো সেই দিন

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র একসময় দেশের দর্শকদের মনকাড়াই শুধু নয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও পুরস্কার অর্জন করেছে। পাকিস্তান আমলে উর্দু ছবির আগ্রাসন থামিয়ে দিয়েছে ঢাকায় নির্মিত একের পর এক মানসম্মত ছবি। বাংলা ছবির উর্দু ভার্সন পাকিস্তানের সিনেমা হলগুলোতেও বাজিমাত করেছে। স্বাধীনতার আগে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এ দেশে তৈরি হয়েছে মুখ ও মুখোশ, রাজধানীর বুকে, হারানো দিন, সূর্যস্নান, কাচের দেয়াল, সুতরাং, কাগজের নৌকা, জীবন থেকে নেয়ার মতো ছবি। স্বাধীনতার পর আবার তোরা মানুষ হ, ওরা ১১ জন, সূর্যগ্রহণ, সীমানা পেরিয়ে, তিতাস একটি নদীর নাম, সারেং বউ, গোলাপী এখন ট্রেনে এবং আগুনের পরশমণির মতো ছবি দেশ ও বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। চলচ্চিত্রশিল্পে দুর্জনদের থাবা সেই সুদিনের অবসান ঘটিয়েছে। একসময় ঢাকায় নির্মিত প্রায় প্রতিটি ছবি পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে যেত মানুষ। কিন্তু চলচ্চিত্রে নগ্নতার চর্চা এবং নকলবাজি এ শিল্প সম্পর্কে জনমনে এমনই নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে যে মানুষ নিজেদের সম্মানের কথা চিন্তা করেই সিনেমা হলমুখী হতে চায় না। পরিণতিতে গত তিন দশকে দেশে একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। এ অধঃপতিত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চলচ্চিত্রশিল্প-সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে আশার কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখা যায় এমন ছবি এমনকি শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণেও তাগিদ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বাঙালি জাতির বিজয়ের ইতিহাস প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে অধিক হারে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণেরও পরামর্শ দিয়েছেন। চলচ্চিত্রের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গড়ে তোলাসহ এ শিল্পের পুনরুজ্জীবনে সম্ভাব্য সবকিছু করার প্রতিশ্রুতিও উচ্চারিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। চলচ্চিত্রশিল্পের পুনরুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস শুধু প্রাসঙ্গিকই নয় তাৎপর্যের দাবিদার। আমরা আশা করব প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চলচ্চিত্রশিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় অবদান রাখবে।

চলচ্চিত্র হয়ে উঠবে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর