বিশ্বজুড়ে বিপন্ন হয়ে পড়া ইরাবতী ডলফিনের সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের কোথাও ২০০-এর বেশি এ প্রজাতির ডলফিন বা শুশুক দেখা যায় না। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এর কারণ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে নোনা ও মিঠা পানির অনুকূল ভারসাম্য। বন বিভাগের উদ্যোগে ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থায়নে ২০১৮ সালে পরিচালিত এক জরিপ এমন তথ্য দিয়েছে। ডলফিনের বসবাসের উপযুক্ত এলাকা চিহ্নিত করাই ছিল ওই জরিপের লক্ষ্য। জরিপে সুন্দরবনসহ দেশের উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও প্রধান নদ-নদীগুলোয় ডলফিনের বিচরণ এবং বসবাসের জন্য উপযুক্ত এলাকা খুঁজে পাওয়া যায়। মূলত নদ-নদীতে দূষণ ক্রমাগত বেড়ে যাওয়া, কারেন্ট জালের বিস্তার ও যান্ত্রিক যানের সংখ্যা বৃদ্ধির পরও দেশে ডলফিন টিকে আছে। তবে যেভাবে ডলফিনের বসতি এলাকায় মানুষের উৎপাত বাড়ছে তাতে সামনের দিনগুলোয় এদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মৃত ডলফিন ও তিমি সৈকতে ভেসে আসে। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে বিশালাকৃতির একটি মৃত তিমি। গভীর রাতে সৈকতের লেম্বুর বন-সংলগ্ন তিনটি নদীর মোহনায় ১০ ফুট লম্বা তিমিটি ভেসে ওঠে। এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হয় জেলেদের আঘাতেই তিমিটির মৃত্যু হয়েছে। তবে কী কারণে এসব জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি মৎস্য বিভাগ। মৃত এসব জলজ প্রাণী সংরক্ষণের জন্য কুয়াকাটায় একটি সংরক্ষণাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা। তবে সংরক্ষণাগার না থাকায় জলজ প্রাণীটি ট্যুরিস্ট পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূল ও নদী এলাকাগুলোয় এখনো ডলফিনের টিকে থাকার মতো পরিবেশ আছে। নদ-নদীগুলো দূষিত হয়ে পড়ায় ও জেলেদের নৌকায় আটকানোর পর এদের মেরে ফেলার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আন্তরিক হতে হবে।