সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মাদক মামলায় দীর্ঘসূত্রতা

এ অবস্থার অবসান কাম্য

মাদকের ২৬ হাজারেরও বেশি মামলা পাঁচ বছর ধরে ঝুলে থাকার ঘটনা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, দুর্ভাগ্যজনক। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা প্রকারান্তরে অপরাধীদের সাজা নিশ্চিতকরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক সংক্রান্ত মামলায় আটক ব্যক্তিরা জামিন পেয়ে আবারও অপরাধ সংঘটনের সুযোগ পাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে মাদক মামলা ঝুলে থাকার পেছনে তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষীদের গাফিলতি অনেকাংশে দায়ী। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় দেশের প্রথম ইয়াবা সংক্রান্ত মামলার বিচার ১৭ বছরেও শেষ করা সম্ভব হয়নি। আদালত সংশ্লিষ্টরাও স্বীকার করেন বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর। বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে স্থবিরতা বিরাজ করছে কোথাও তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে, কোথাও সাক্ষীদের অনুপস্থিতি মামলায় দীর্ঘসূত্রতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সাক্ষী হাজির ও আসামি হাজিরের ক্ষেত্রে অযথা সময় নেওয়ার প্রবণতাও মামলাকে দীর্ঘায়িত করছে। মাদক মামলার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাক্ষী হিসেবে রয়েছে পুলিশের নাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে সাক্ষ্যদানে উপস্থিত থাকার ক্ষেত্রে তারা দায়বদ্ধ ভূমিকা পালন করবেন এমনটিই আশা করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে দায়বদ্ধতার প্রচ- অভাব দেখা যায় মাদক মামলার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মুখ্য মহানগর আদালত ভবনে সাধারণ নিবন্ধন শাখা (জিআর)। হেঁটেই এক আদালত থেকে আরেক আদালতে যাওয়া যায়। কিন্তু তিন বছরে একবারও সেখানে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময় হয়নি জিআর শাখায় কর্মরত এক কর্মকর্তার। তিনি আগে যাত্রাবাড়ী থানায় কর্মরত ছিলেন। এ থানারই একটি মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষী তিনি। এ ছাড়া ২৬ বছর ধরে আরেকটি মামলায় হাজির হচ্ছেন না তদন্ত কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার সাক্ষীরা। মাদক মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান ও সাক্ষ্যদানে পুলিশের মধ্যে আগ্রহের অভাব কেন বিরাজ করছে এ বিষয়টি যথাযথভাবে উদঘাটিত হওয়া উচিত।  যেসব কারণে মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে তার গ্রন্থিমোচনে আদালত সংশ্লিষ্ট সব মহল সক্রিয় হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর