বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ছে বিত্তশালী

হঠাৎ কোটিপতিদের জবাবদিহি কাম্য

দেশে বিত্তশালী বাড়ছে স্পুটনিক গতিতে। বিত্তশালী বৃদ্ধি যে কোনো দেশের জন্যই সুখবর। তবে আমাদের দেশে রাতারাতি বিত্তশালী বৃদ্ধি নেতিবাচক বিবেচিত হচ্ছে। কারণ হঠাৎ ধনীর এক বড় অংশেরই আয়ের বৈধ কোনো পথ নেই। তাদের ধনী হওয়ার পেছনে রয়েছে দুর্বৃত্তায়নের সম্পর্ক। ঘুষ, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, মানব পাচার, মাদক ও নকল-ভেজালের ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধ। সরকারি চাকরির নিয়োগ-বাণিজ্য এবং শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দলের নেতা নিয়োগ পাওয়া অনেক সময় আলাদিনের চেরাগের মতোই ধনসম্পদ অর্জনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। গত এক দশকে মাদক, টেন্ডার, দলীয় প্রভাব, দখলবাজি, দালালি, প্রতারণামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটিপতির জন্ম হয়েছে। হঠাৎ ধনীর মধ্যে অন্তত ১ হাজার জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দাখিল হলেও বিশেষ কোনো ব্যবস্থা এ যাবৎ দৃশ্যমান নয়। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে উৎসহীন বেশুমার টাকার গরমে তারা সমাজের নানা স্তরে বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে নিজেদের ক্ষমতা জানান দেয়। সর্বত্রই অসম লড়াই সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়ার বৈধ কোনো লটারিব্যবস্থা নেই। আছে রাতারাতি অলৌকিক কায়দায় আলাদিনের আশ্চর্য জাদুর প্রদীপ লাভের সুবিধা। এ প্রদীপের মালিক হওয়া যায় যেভাবেই হোক জনপ্রতিনিধির পদ বাগিয়ে। সরকারি চাকরিও কখনো কখনো হয়ে দাঁড়ায় আলাদিনের চেরাগের বিকল্প। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং মাদক ব্যবসা রপ্ত করতে পারলে মেলে রাতারাতি বিত্তবান হওয়ার সুবিধা। দেশে আইনের শাসনের শিথিলতা, বিচারব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতা অপরাধীদের অপরাধ সংঘটনে সাহস জোগাচ্ছে। গত এক যুগে দেশের মানুষের সার্বিক উন্নতি ঘটেছে সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে। কিন্তু বিত্তশালীর সংখ্যা অসম্ভব বৃদ্ধি সামাজিক বৈষম্য বাড়াচ্ছে। তাই হঠাৎ বিত্তশালীদের জবাবদিহিকরণে সরকারের তীক্ষ্ণ নজর রাখা জরুরি হয়ে উঠেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর