রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

নদী দখলে জিরো টলারেন্স

প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা কাম্য

দেশের নদ-নদী দখল-দূষণের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বিষয়টি প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু সরিষার মধ্যেও ভূত থাকায় দূষণ-অপদখলকারীদের থাবা থামছে না। রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায়ও নদী দখল করে কলকারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী এ দেশের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগব্যবস্থায় নদী বিশেষ অবদান রাখছে। চাষাবাদে পানি সেচে নদীর ভূমিকা অসামান্য। নদী থেকে আহরিত মাছ দেশবাসীর আমিষ চাহিদার এক বড় অংশ মেটায়। দেশের নদীর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যকে ব্যবহার করা গেলে পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় পর্যটনস্থলে পরিণত হবে। অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, জনসচেতনতার অভাবে দেশের নদ-নদী অস্তিত্ব হারাচ্ছে। দখল ও দূষণের নির্মম শিকার দেশের ৭৭০টি নদী। এসব নদীর বিভিন্ন অংশে দখলবাজ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে অন্তত ৪৯ হাজার ১৩২ জন ক্ষমতাধর মানুষ। নদী দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে ঘরবাড়ি, কারখানাসহ নানা স্থাপনা। নদী সুরক্ষায় নদী কমিশন গঠিত হলেও তার অবস্থা ঠুঁটো জগন্নাথের মতো। নিজস্ব জনবল না থাকায় নদী উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল এ কমিশন। হাই কোর্টের রায়ে নদী দখলকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করা হলেও দখলবাজরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। নদী দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসকদের অধীনে প্রাথমিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের নির্দেশ দেওয়া হয়। করোনাকালে নদী উদ্ধার বন্ধ থাকলেও কয়েক মাস ধরে চলছে নতুন কার্যক্রম। নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনায় আর্থিক বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। নদী সুরক্ষায় জনবলের স্বল্পতা এবং অন্যান্য সীমাবদ্ধতাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো যাতে না হয় এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর