শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

রুখতে হবে নদীদূষণ

জনসচেতনতাই হতে পারে শেষ ভরসা

বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ নদ-নদী ও জলাধারগুলোর মিঠা পানি। অথচ এ সম্পদ রক্ষায় কারও কোনো দায়বদ্ধতা আছে কিনা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে নদীদূষণের ভয়াবহ অপরাধ অবাধে সংঘটনে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়া বুড়িগঙ্গা নদীর পানি ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, আড়িয়াল খাঁ, ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যাসহ ধারে-কাছের সব নদ-নদীতে। এ দূষিত পানি নদ-নদী হয়ে গিয়ে পড়ছে বঙ্গোপসাগরে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অন্য নদ-নদীর পানিও বুড়িগঙ্গার মতোই ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়বে। রাজধানীর প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা বর্জ্য ফেলার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অন্তত সাত-আট দশক ধরে। দুই তীরে গড়ে ওঠা সব কলকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। বুড়িগঙ্গার দূষণ এখন আর এ নদীতে সীমাবদ্ধ নেই। তা ছড়িয়ে পড়ছে চাঁদপুর অঞ্চলের পদ্মা, মেঘনার মোহনায়ও। ধারে-কাছের আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যার বিভিন্ন প্রান্তে অনুভূত হচ্ছে দূষণের থাবা। দখল আর দূষণের ফলে তুরাগ এখন একটি মরা নদ। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় যাদের পোষা হয় তাদের নির্বিকার ভূমিকা নদী দূষণ ও দখলে মদদ জোগাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত মেঘনাকে বলা হয় দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় স্বচ্ছ পানির নদী। একসময় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি পানোপযোগী ভাবা হতো। কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের নিস্পৃহতায় বুড়িগঙ্গা বিশ্বের শীর্ষ দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা তুরাগ ও শীতলক্ষ্যার। দূষণের ভয়াল থাবা থামাতে না পারলে দেশের আরও অনেক নদ-নদী দূষণের শিকার হবে। নদ-নদীসহ প্রাকৃতিক সব জলাধার সুরক্ষায় ট্যাক্সের টাকায় লাটসাহেব পোষার চেয়ে শেষ ভরসা হিসেবে জনসচেতনতা গড়ে তোলার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নদ-নদী দখল-দূষণের বিরুদ্ধে সক্রিয় করার কথা ভাবা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর