রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিমানের দুরবস্থা

লোকসান কমানোর উদ্যোগ নিন

করোনায় দুনিয়াজুড়েই বিপর্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য। বিশেষত বিমান পরিবহন খাতে যে ধস নেমেছে তা এক কথায় অকল্পনীয়। রমরমা ব্যবসা করত বিশ্বের যেসব বিমান সংস্থা সেগুলোও গত এক বছরে আকাশছোঁয়া লোকসানের শিকার। লোকসান কমাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাইও করেছে। আর আজন্ম লোকসান করে আসা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জন্য করোনাকাল হেনেছে মারাত্মক আঘাত। যে সময়ে বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার নানামুখী চেষ্টা চলছিল সরকারের পক্ষ থেকে সে সময় করোনার আঘাত তাদের কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ার মতো বিপদ সৃষ্টি করেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান লোকসান কমাতে কর্মী ছাঁটাই করলেও বিমান সে পথ বেছে নিতে পারছে না বেকারত্বের অভিশাপ থেকে কর্মীদের বাঁচানোর মহৎ প্রয়াসে। মহামারীতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আয় কমলেও ব্যয় না কমায় ত্রিশঙ্কু অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি মাসে প্রতিষ্ঠানটির উড়োজাহাজ কেনার কিস্তি, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, বীমার কিস্তি বাবদ প্রায় ২২০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিমানকর্মীদের বেতন-ভাতা, জ্বালানি খরচ ও পরিচালন ব্যয় ধরে মোট খরচ প্রায় ৪০০ কোটি টাকায় উঠে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ১ হাজার কোটি টাকার ঋণ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলসহ অপারেশনাল ব্যয় মেটাতে এরই মধ্যে ব্যাংক থেকে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বিমান। তবে করোনাকালে ব্যয়ের তুলনায় আয় কমে যাওয়ায় এখন প্রতিষ্ঠানটি আগের ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বিমানের এ দুরবস্থার মোচন এ মুহূর্তে আলাদিনের চেরাগের দ্বারাই সম্ভব। বাস্তবে যার অস্তিত্বই নেই। তাই বাস্তবতার খাতিরে লোকসান কমাতে মধ্যপ্রাচ্যসহ যেসব রুটে এখনো ব্যবসার সুযোগ আছে সেসব রুটে বেসরকারি বিমান সংস্থার বদলে বিমানকে সুযোগ দিতে হবে। লোকসানি কার্যক্রম সীমিত করার উদ্যোগও নিতে হবে জরুরিভাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর