বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা

২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা অভিনন্দনযোগ্য

বাংলাদেশের আজকের অবস্থানের পেছনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধাদের অবদান অনন্য এবং অতুলনীয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়। সরকার গঠনই শুধু নয়, পাকিস্তানের নতুন শাসনতন্ত্র নিজেদের মতো করে তৈরির ম্যান্ডেটও পায়। কিন্তু নির্বাচিত দল ও নেতাকে ক্ষমতা হস্তান্তরের বদলে পাকিস্তান সামরিক জান্তা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। তারা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের জনগণকে স্তব্ধ করার প্রস্তুতি নেয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে শুরু হয় গণহত্যা। এ প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদাররা গ্রেফতারে সমর্থ হলেও ওই দিনই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি দখলদাররা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের পরও বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার দুই দশক পর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা দেওয়ার পদ্ধতি চালু করেন। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ভাতা ১২ হাজারের বদলে ২০ হাজার টাকায় উন্নীতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জীবনমানে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে কিছুটা হলেও যে অবদান রাখবে সন্দেহ নেই। করোনাকালে সরকার যখন অর্থনৈতিক ঘাটতি মোকাবিলার কঠিন সংগ্রামে লিপ্ত তখন এ সিদ্ধান্ত প্রমাণ করল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ সরকারের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব কতটা বেশি। সম্মানী ভাতা সরাসরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগও অভিনন্দনযোগ্য।  আমরা এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই। এ সিদ্ধান্ত কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয়কেই গৌরবান্বিত করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর