মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

আত্মহত্যার প্রবণতা

পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা কাম্য

যান্ত্রিক সভ্যতার বিকাশ যত ঘটছে মানুষ ততই ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার ঘেরাটোপে আটকা পড়ছে। বাড়ছে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব। জীবন-জীবিকার পেছনে ছোটা বাবা-মার কাছ থেকে পর্যাপ্ত সময় না পেয়ে সন্তানের মনোজগতে হতাশা তৈরি হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় মানুষ মনের ভাব আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে প্রায় অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছে। এ স্বাধীনতার অপরিণামদর্শী ব্যবহারে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা শুধু একে অন্যের কাছাকাছি হওয়া নয় সহজেই জৈবিক সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়ছে। এ সম্পর্কের জেরে কোনো কোনো সময় ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকারও হচ্ছে অনেকে। জীবন-জীবিকার সংগ্রামও মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। বিশেষত করোনাকালে এ সমস্যা মহিরুহ হয়ে দেখা দিয়েছে; যা হতাশাগ্রস্তদের একাংশকে আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর পথ বেছে নিতেও বাধ্য করছে। করোনা মহামারীর কারণে দুনিয়াজুড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, অর্থনৈতিক কর্মকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে কোটি কোটি মানুষ। আয় কমেছে এমন মানুষের সংখ্যাও অগুনতি। আর্থিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে দুনিয়াজুড়ে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখালেও অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকানো যায়নি শতচেষ্টা করেও। পরিণতিতে মহামারীর সময় আত্মহত্যার কারণে আগের বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে ১৩ শতাংশ বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আত্মহত্যাপ্রবণতার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হতাশা ও বিষণœতা। বৈষম্যের দারুণ কষ্ট এবং প্রতারিত হওয়ার অসহ্য যন্ত্রণাও আত্মহননের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। হতাশা নামের মানসিক অসুস্থতা আমাদের পারিবারিক ও সমাজ জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিশেষত কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণীদের মধ্যে হতাশার থাবা যেভাবে বাড়ছে তা উদ্বেগজনক। এর মোকাবিলায় থাকতে হবে পারিবারিক উদ্যোগ। বেকারত্ব নিরসনে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের প্রয়োজনও অনস্বীকার্য। তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধেও প্রশাসনকে শক্ত হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর