বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিনিয়োগের খরা

আমলাতান্ত্রিকতার অবসান হোক

বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে রয়েছে বিশাল ফারাক। কাগজে কলমে বিদেশি বিনিয়োগের যেসব প্রস্তাব আসে তার এক তৃতীয়াংশই মাত্র শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে। এমনকি চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ কেন্দ্র করে ৮৬টি জাপানি কোম্পানি চীন থেকে তাদের কারখানা ধারে-কাছের দেশগুলোয় সরিয়ে নিলেও এর একটিও আসেনি বাংলাদেশে। কাগজে কলমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এক যুগ ধরে এ দেশে নিরবচ্ছিন্ন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এই সময়ে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারও বড়সড়ো। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়নের থাবা বাংলাদেশে শুধু বিদেশি নয়, দেশি বিনিয়োগও নিরুৎসাহ করছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরীতে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। কিন্তু ওই শিল্পনগরীর বিদেশি অংশ নির্মাণের সময়সীমা দুই বছর পেছানো হয়েছে। ফলে সেখানে যেসব বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে তা চূড়ান্ত বিনিয়োগে রূপ নিতে অপেক্ষার প্রহর বাড়বে। দেশি বিনিয়োগ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করে। অথচ দেশি বিনিয়োগও বাড়ছে না কাক্সিক্ষত হারে। ফলে দেশের ব্যাংক খাতে জমছে অলস টাকার পাহাড়। নভেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে অলস টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার কোটি; যা চলতি মাসের শেষে ২ লাখ কোটিতে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর অর্থও শতভাগ বিতরণ করেনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশি বিনিয়োগে খরা না কাটার পেছনে যা একটি কারণ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়ায় কর্মসংস্থানের বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অভাব-অনটনের শিকার হচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। এ অবস্থার মোকাবিলায় শুধু বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন নয়, তার যথার্থ বাস্তবায়নেও সচেষ্ট হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর