শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সমস্যায় আক্রান্ত ঢাকা

বসবাস-উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করুন

দেড় কোটি মানুষের নগরী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। ৪০০ বছরের বেশি পুরনো এ জনপদ এখন বিশ্বের মেগা সিটিগুলোর একটি। অন্তত ১০০ দেশের যে কোনোটির জনসংখ্যা ঢাকা মহানগরীর চেয়ে কম। ঘনবসতির নগর হিসেবেও রয়েছে ঢাকার পরিচিতি। ঢাকার উত্থান ঘটেছিল মুঘল আমলে প্রদেশ বা সুবার রাজধানী হিসেবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর ঢাকা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজধানীতে পরিণত হয়। গত অর্ধশতাব্দীতে এ মহানগরীর জনসংখ্যা বেড়েছে স্পুটনিক গতিতে। স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে আয়তনও। রাজধানীর উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও উদ্ভূত সমস্যার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ঢাকা ক্রমান্বয়ে সমস্যার নগরীতে পরিণত হয়েছে। একসময় ঢাকার পরিচিতি ছিল মশা ও মাছির নগরী হিসেবে। উন্মুক্ত শৌচাগার না থাকায় মাছির উৎপাত এখন নেই বললেই চলে। তবে এক শতাব্দী আগের মতো এখনো ঢাকার সাক্ষাৎ সন্ত্রাস হিসেবে বিবেচিত হয় মশা নামের ক্ষুদ্র কীট। রাতের বেলায় রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকা মশার দখলে চলে যায়। দিনের বেলায়ও এর উপদ্রব অনুভূত হয় শুধু নোংরা বস্তি নয় অভিজাত এলাকায়ও। মশা নিধনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও ফললাভে সন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে ওঠা এ মেগা সিটিতে সারা বছর চলে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। রাজধানীর ফুটপাথগুলো যেন পথচারীদের চলাচলের জন্য নয়, অপদখলকারীদের চাহিদা পূরণের জন্য তৈরি। ড্রেনেজ ব্যবস্থার হযবরল অবস্থাও পীড়াদায়ক বাস্তবতা। রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। ধুলা-ধোঁয়া-বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থা শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে উঠছে দিন দিন। রাজধানীর সৌন্দর্যবর্ধনে খাতাপত্রে প্রকল্প নেওয়া হলেও তার কার্যক্রম নেই বললেই চলে। বসবাস-অযোগ্য পরিবেশের কারণে বাধ্য না হলে বিদেশিরা আসতে চান না এ নগরীতে। এ চিত্র কোনোভাবেই সুখকর নয়। বাংলাদেশের রাজধানীর মর্যাদা রক্ষায় একে বসবাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর