শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফজিলতময় জুমার দিন

আবদুর রশিদ

জুমার দিনটি ফজিলতময়। ইবনে মাজায় বর্ণিত হাদিসে রসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ আর মুসলিমের হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন।’

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এ দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ মুসলিম। জুমার দিনের আরেকটি ফজিলত, এ দিনে আল্লাহ তাঁর দীনকে পরিপূর্ণ করেছেন। ইহুদি এক ব্যক্তি ওমর (রা.)-কে বললেন, হে আমিরুল মোমিনিন! আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত আছে। যদি তা আমাদের ওপর অবতীর্ণ হতো; তাহলে তাকে আমরা ঈদের দিন হিসেবে উদযাপন করতাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আয়াত? ইহুদি বললেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।’ সুরা মায়িদা, আয়াত ৩। ওমর (রা.) বললেন, ‘এটি নাজিল হওয়া দিনের কথা আমি জানি। যে স্থানে এটি অবতীর্ণ হয়েছে তাও আমি জানি। এটি জুমার দিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর আরাফার ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে।’ বুখারি, মুসলিম।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যায়। তারা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করে। এরপর যখন ইমাম এসে যায় তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকে। যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দুই নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে তিন নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি দুম্বা দান করার সওয়াব পায়। যে চার নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি মুরগি দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পাঁচ নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়।’ বুখারি, মুসলিম, ইমাম শাফি।

জুমার দিনে গুনাহ মাফ হওয়ার ঘোষণা রয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও এক জুমা থেকে অন্য জুমা মাঝের সব গুনাহ মাফ করে দেয় যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়।’ মুসলিম।

তিনি আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে সে সময়টিতে একজন মুসলমান যে কল্যাণের দোয়া করবে অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।’ মুসলিম। আর এটি আসরের একেবারে শেষ সময়।

জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সেই মহামূল্যবান সময় কোনটি- এ সম্পর্কে আলেমদের মধ্যে প্রায় অর্ধশত মত পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হলো আসর থেকে মাগরিব। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনের কাক্সিক্ষত সময়টি হলো আসরের পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত’। মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, তিরমিজি।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর