রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

উন্নয়নশীল বাংলাদেশ

আত্মপ্রসাদ নয় আরও এগোতে হবে

বাংলাদেশকে একসময় বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। বলা হতো এ দেশ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই ব্যর্থ হবে। প্রতিহিংসাবাদীদের মুখে ছাই দিয়ে সে দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছরের প্রাক্কালে স্বল্পোন্নত দেশের লজ্জা কাটিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। বাংলাদেশ নামের জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকীতে এটি ছিল দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য জাতিসংঘের সেরা উপহার। করোনাকালে যখন উন্নত দেশগুলো নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে তখন জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি-সিডিপির ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নের পর গত শুক্রবারের বৈঠকে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের দেওয়া একটি প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়। যাতে করোনার কারণে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতিমূলক সময়সীমা তিন বছরের বদলে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। গত জানুয়ারিতে দেওয়া এ প্রস্তাব গ্রহণ করায় আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রাপ্য সুবিধা ভোগ করতে পারবে। মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশের এ উত্তরণকে যেমন একদিকে ১৬ কোটি বাঙালির জন্য বিরাট অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে, তেমন তা বাংলাদেশের জাতির পিতার স্মৃতির প্রতিও এক অনন্য সম্মান বলে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। বাংলাদেশ আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। করোনা মোকাবিলা এবং অর্থনীতি সুরক্ষায় অসাধারণ সাফল্য দেখালেও স্বীকার করতেই হবে তার পরও বাংলাদেশে মহামারীকালে যে ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে তা পুষিয়ে নেওয়া কঠিনই বটে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর তিন বছর বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশের জন্য তা পাঁচ বছর করায় করোনার ক্ষত উপশমে কাজে লাগবে। ১৯৭১ সালে বাঙালি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জন করেছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতা। প্রায় ৫০ বছর পর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ভিত দৃঢ়তর হবে। আমরা এ অর্জনকে জাতির জনকের প্রতি জন্মশতবর্ষের অর্ঘ্য হিসেবে বিবেচনা করতে চাই। এগিয়ে যেতে চাই উন্নতির কাক্সিক্ষত শিখরে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর