মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সুরা মসজিদ

সুরা মসজিদ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সুরায় অবস্থিত। ঘোড়াঘাট ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং একই দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকার এ মসজিদের সম্মুখভাগে একটি বারান্দা রয়েছে। মসজিদটি একটি উঁচু চত্বরের ওপর নির্মিত। পুব পাশ থেকে কয়েক ধাপ সিঁড়ি চত্বর পর্যন্ত উঠে গেছে। উন্মুক্ত চত্বরটির চারপাশ পুরু প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। বর্তমানে স্থাপনাটির ভিত পর্যন্তই প্রাচীর রয়েছে। তবে পুব পাশের প্রবেশদ্বারের উচ্চতা থেকে অনুমান করা যেতে পারে যে মসজিদটিকে বাইরের শব্দ ও কোলাহল থেকে মুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে বেষ্টন-প্রাচীরগুলোও যথেষ্ট উঁচু করে নির্মিত হয়েছিল। বাংলার আর কোনো মসজিদে এমন কৌশল আগে কখনো দেখা যায়নি। এতে একটি বর্গাকার নামাজ-কক্ষ আছে, যার প্রতিটি পাশের দৈর্ঘ্য ৪.৯ মিটার। সব কোণে আছে অষ্টভুজ স্তম্ভ, মোট স্তম্ভের সংখ্যা ৬। কার্নিশ রীতিমাফিক বাঁকানো। পুব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে খিলানবিশিষ্ট প্রবেশপথ আছে। পশ্চিম দিকে আছে তিনটি কারুকার্যখচিত মিহরাব। হলঘরটি একটি গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজটি স্তম্ভের ওপর বসানো স্কুইঞ্চের ওপর স্থাপিত। মসজিদের বারান্দাজুড়ে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। এগুলো পেনডেনটিভ পদ্ধতিতে স্থাপিত। ছোট সোনা মসজিদের সঙ্গে এ গম্বুজগুলোর ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য আছে। গম্বুজগুলোর ভিত পোড়ামাটির কারুকার্যখচিত ইট দ্বারা অলঙ্কৃত। এখান থেকে কোনো লিপিফলক পাওয়া যায়নি। নির্মাণশৈলীর ভিত্তিতে আহমদ হাসান দানী মসজিদটিকে হোসেন শাহি আমলের বলে মনে করেন। সম্প্রতি এ স্থান থেকে কয়েক মাইল দূরে চম্পাতলীতে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলের একটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়েছে। তাতে ৯১০ হিজরি (১৫০৪ খ্রিস্টাব্দ) উল্লেখ আছে। এতে একটি মসজিদ নির্মাণের উল্লেখ রয়েছে। যদি ধরে নেওয়া হয় যে এ লিপিটির সঙ্গে সুরা মসজিদের সম্পর্ক আছে তাহলে মসজিদটির নির্মাণকাল ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দ বলে ধরা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর