মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ভেজাল মদ

সমস্যার উৎসে হাত দিন

দেশে বৈধ পথে মদ উৎপাদনের সুযোগ একেবারেই সীমিত। হরেক বাধা ও শুল্কারোপে মদ আমদানিও ব্যয়বহুল। আর এ সুযোগে দেশজুড়ে চলছে নকল-ভেজাল মদের ব্যবসা। কিছু জালিয়াত ও তাদের সহযোগী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং পুলিশের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এতে লাভবান হলেও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। দেশজুড়ে ঘটছে একের পর এক মৃত্যু। অতিসম্প্রতি শুধু বগুড়াতেই ভেজাল মদপানে মারা গেছেন ২০ জন। নকল-ভেজাল মদ তৈরির ব্যবসায় সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে একশ্রেণির হোমিও ফার্মেসি। হোমিও ওষুধ তৈরির উপকরণ হিসেবে তারা আইনি আওতায় মজুদ রাখতে পারছে ইথানল। এমনকি অতিলোভীদের কেউ কেউ মজুদ ও বিকিকিনি করছে মিথানল নামের বিষ ইথানল নামে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো হোমিও ওষুধ নামের মদ তৈরির উপকরণ বিক্রির আখড়ায় অভিযান চালাতে পারছে না। ইথালন হলো রেকটিফায়েড স্পিরিট। মিথানল ব্যবহার করা হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে। কাঠের আসবাবও রং করা হয় এটি দিয়ে এবং তা একটি পরিপূর্ণ বিষ। মদে মিথানল ভেজাল দেওয়ায় তা পান করে মানুষ মারা যাচ্ছে। দেশে প্রাকৃতিক উপায়েই ইথানল তৈরি হয় আর শিল্পকারখানার জন্য আমদানি করা হচ্ছে মিথানল। সে হিসেবে ইথানল ও মিথানল দুটি রাসায়নিকই বাংলাদেশে সহজলভ্য। ১ লিটার ইথানল কিনতে খরচ হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, অন্যদিকে একই পরিমাণ মিথানলের খুচরা দাম মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। মিথানল শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়ায় কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং কিডনি সেই অতিরিক্ত অ্যাসিড পরিশোধন করতে পারে না। ফলে কিডনি বিকল ও চোখের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, প্রচন্ড বমি হতে থাকে এবং দম বন্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা সৃষ্টি করে। নকল-ভেজাল মদ তৈরি বন্ধে প্রশাসনকে সমস্যার উৎসে হাত দিতে হবে। দেশে মদ তৈরি ও আমদানিতে যে বাধা রয়েছে তার যৌক্তিকতা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়াও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর