শুক্রবার, ৫ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

অপপ্রয়োগের ফাঁকফোকর বন্ধ হোক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ রোধে অবশেষে সরকারের সুমতির প্রকাশ ঘটেছে। আইনমন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, এ আইনে কোনো অপরাধের অভিযোগ এলে পুলিশের তদন্তের আগে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বা তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছিলেন সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিবৃত্তির বোদ্ধাজনেরা। আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ না করলেও এর যাতে অপব্যবহার না হয় তা নিশ্চিত করার দাবি তুলেছিলেন তারা। কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীলরা এ ব্যাপারে ‘পিঠে বেঁধেছি কুলো আর কানে দিয়েছি তুলো’ নীতি অনুসরণ করে আইনের ত্রুটি সম্পর্কিত সমালোচনাগুলো বিবেচনায় আনেননি। কিন্তু কারাবন্দী একজন লেখকের মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে প্রতিবাদ উঠেছে সে প্রেক্ষাপটে কর্তাব্যক্তিরা কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠেছেন। স্মর্তব্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে সরকার। আইনটির খসড়া দেখেই গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীরা এর অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করে আপত্তি তুলেছিলেন। তারা আইনটির অজামিনযোগ্য ধারা, অভিযোগের পর পুলিশি তদন্ত ছাড়াই গ্রেফতারসহ আরও কিছু ধারায় আইনের অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। আপত্তিগুলো যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও উপেক্ষিত হয়। আইন পাসের পর বেশ কিছু ঘটনায় আইনটি নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। সর্বশেষ এ আইনে নয় মাস আটক থাকা লেখক মুশতাকের মৃত্যুর পর অভিযোগ উঠেছে, ছয়বার আবেদন করেও জামিন মেলেনি তাঁর। মূলত আইনটির অজামিনযোগ্য ধারা এবং অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত ছাড়াই গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়েই বেশি বিতর্ক হচ্ছে। মুশতাকের মৃত্যুর পর বিভিন্ন মহল থেকে আইন সংশোধনেরও দাবি উঠেছে। আজকের যুগ তথ্যপ্রযুক্তির। এ প্রযুক্তির অপব্যবহার যেমন কোনোভাবে কাম্য নয়, তেমন আইনের নামে হয়রানিও অগ্রহণযোগ্য। এ বিষয়ে সরকারের সুমতিকে আমরা স্বাগত জানাতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর