রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ব্লু-ইকোনমি

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের স্থলভাগের আয়তন যেখানে মাত্র ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটারের সামান্য বেশি, সেখানে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার ওপর অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ অর্জন যে আমাদের কত বড় সৌভাগ্য, তা সহজেই অনুমেয়। দুঃখজনক হলো, এই বিজয় অর্জনের কয়েক বছর অতিক্রান্ত হলেও যথাযথ অগ্রাধিকার দিয়ে আজও বিশাল সমুদ্রসীমা থেকে সম্পদ আহরণ জোরদার করা যায়নি। ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুই ধরনের সম্পদ অর্জন করেছে। এর একটি হলো- প্রাণিজ আরেকটি অপ্রাণিজ। প্রাণিজের মধ্যে রয়েছে মৎস্যসম্পদ, সামুদ্রিক প্রাণী, আগাছা-গুল্মলতা ইত্যাদি। অপ্রাণিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে খনিজ ও খনিজ জাতীয় সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস, চুনাপাথর ইত্যাদি। আরও রয়েছে ১৭ ধরনের মূল্যবান খনিজ বালু। বলা যেতে পারে, সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনায় বাংলাদেশ। ভারত ও মিয়ানমার থেকে অর্জিত সমুদ্রসীমায় ২৬টি ব্লক রয়েছে। ইজারা দিয়ে এসব ব্লক থেকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া সম্ভব হবে। ২০১৭ সালে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হয় ‘ব্লু-ইকোনমি সেল’। সমুদ্রের তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে তা টেকসই উন্নয়নের জন্য সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ উত্তোলন, মৎস্যসম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনামাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে কয়েক বছরের মধ্যে প্রতি বছর আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা সম্ভব। দ্রুত সমুদ্র সম্পদ আহরণে নামার যে মনোভাব, সেটা অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু ইচ্ছা করলেই সবকিছু দ্রুত করা যায় না। বাস্তবতা অতটা সহজ নয়। কিছু সমস্যা থাকে। সেগুলোর নিরসন করে এগোতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।  সমুদ্র বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে প্রয়োজনীয় জনবল তৈরি করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর