সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষক রাজনীতি

আজ্ঞাবহ নয় জ্ঞান সাধনায় ব্রতী হোন

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পেশা নির্বাচনে ঔপনিবেশিক আমল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়ার বিষয়টি সামাজিকভাবে স্বীকৃত রীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে মেধাবীদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মেধাবীরা যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আকৃষ্ট হন এবং নির্বিঘ্নে তাঁদের শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে পারেন, সে জন্য অগ্রসর দেশগুলোতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত রাখা হয়। অতিমাত্রায় দলীয় আনুগত্য প্রদর্শন করতে গিয়ে শিক্ষকরা যে লেজুড়বৃত্তির ভূমিকা পালন করছেন তা প্রত্যাশিত নয়। মনে হচ্ছে, দলের প্রতি আনুগত্যের একটি প্রতিযোগিতা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে। এতে ক্ষতি হচ্ছে ব্যক্তি, দেশ ও দলের। এসব থেকে শিক্ষকদের বিরত থাকা উচিত। কোনো দেশেই শিক্ষকরা রাজনীতির ঊর্ধ্বে নন। আদর্শের দিক থেকে তারা নীতিনির্ধারণী ভূমিকা রাখবেন এটি প্রত্যাশা করে সবাই। তবে সেটিকে অতিক্ষুদ্র দৃষ্টিতে দেখলে দলের প্রতি আনুগত্য বেশি হয়ে যায়। শিক্ষকরা রাজনীতির অনুসরণ করবেন, উপদেশ দেবেন, সমালোচনাও করবেন, কিন্তু তাঁদের নৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করে নয়। এ উদ্দেশ্যে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ব্যক্তিত্ব, ভাবমূর্তি, পান্ডিত্য দেখে উপাচার্য নিয়োগ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত অবস্থার উদ্ভব ঘটছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। কেউ কেউ অসলগ্ন বক্তব্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছেন। একাডেমিক গবেষণার সাফল্যের কোনো সংবাদ এখন আর পত্রপত্রিকায় চোখে পড়ে না। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপাচার্য নিষ্কলঙ্ক থাকবেন। দুর্নীতি তাঁদের স্পর্শ করবে না। পদের প্রতি নয়, ন্যায়বিচারের জন্য অবিচল থাকবেন।  পদের মর্যাদা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর