মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

৭ মার্চই প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

৭ মার্চই প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেরও সুবর্ণজয়ন্তী। ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা থেকে আলাদা করা যায় না, যেমনটা আলাদা করা যায় না বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমার চিন্তা-চৈতন্যে, বিচার-বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বাংলাদেশ সমার্থক। একটা অন্যটা থেকে আলাদা নয়। জানি না কেন, কিছু দিন থেকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি নিয়ে কিছুটা সক্রিয় হয়েছে। তারা ২ মার্চ পতাকা দিবস, ৩ মার্চ ইশতেহার পাঠ দিবস পালন করেছে, পালন করেছে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিবসটিকেও। শুধু যা করেনি তা হচ্ছে ৭ মার্চের ভাষণের প্রাণ বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকাকে। কেন বিএনপি মার্চ নিয়ে, মার্চের কর্মকান্ড নিয়ে এত সক্রিয় তা এখনো বুঝতে পারছি না। যখন তারা সরকারে ছিল, দেশ চালিয়েছে তখন আ স ম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজের কর্মকান্ড, ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা সবই গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। আজ যেমন আওয়ামী লীগের বাইরে কেউ মুক্তিযোদ্ধা নয়, বিএনপির সময় বিএনপি ছাড়া কেউ নয়- এমনটা করা হতো। এর কোনোটাই বাস্তবোচিত যথার্থ নয়। কদিন আগেও বিএনপি বলেছে, ৭ মার্চের বক্তৃতাতেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। কে বলেছে শুধু ৭ মার্চের ভাষণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে? ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধের একটা ধাপ। একজন মানুষ তার দেশ ও জাতি সম্পর্কে কতটা জানলে ওইভাবে অনর্গল একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দিতে পারেন। বক্তৃতাটি লিখিত ছিল না। বক্তৃতাটি ছিল পাকিস্তানের বঞ্চনার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের অভিজ্ঞতার ফসল। তিনি যখন বললেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।’ আমি এটা চাই না, ওটা চাই না অমন কথা আগে পরে বহু মানুষ বহু জায়গায় বহুভাবে বলেছে, ভবিষ্যতেও বলবে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর বলা ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি মানুষের অধিকার চাই।’ সেই কণ্ঠ সেই আবেগ সেই দৃঢ়তা আর কারও কোনো দিন হবে না। ‘আমরা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব- ইনশাল্লাহ।’ এসব কথায় কোনো কৃত্রিমতা ছিল না, ছিল একেবারে হৃদয় থেকে বেরিয়ে আসা বাংলার মানুষের আর্তচিৎকার। হ্যাঁ এটা খুবই সত্য, বঙ্গবন্ধুকে বহুজন বহু পরামর্শ দিয়েছে। তবে এ কথা জোর দিয়ে বলব, ছাত্র-যুবক-জাতীয় নেতৃবৃন্দ কেউ তাঁকে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা করতে বলেননি, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যা করা দরকার তা-ই তাঁকে করতে বলেছেন। ছাত্র-যুবকদের মধ্যে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, শেখ মণি, সিরাজুল আলম খান, জননেতা আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাজাহান সিরাজ কেউ বলেননি। কর্মী হিসেবে যার যা বলা উচিত তারা তা-ই বলেছেন আর নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর যা করা উচিত তা তিনি করেছেন। সেজন্যই সফলতা এসেছে। এটা সত্য, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা অবশ্যই তাঁকে বলেছিলেন, ‘কারও কথায় নয়, তোমার মন যা চায় তুমি তা-ই বোলো।’ এটাই প্রকৃত বাঙালি স্ত্রীর ধর্ম। অনেক ক্রান্তিকালে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা তাঁর যথার্থ দায়িত্ব পালন করেছেন। আমাদের নিজেদের মধ্যে যাতে মারামারি কাটাকাটি না হয় কত অভিজ্ঞতা থাকলে এটা বলতে পারেন, ‘শত্রুবাহিনী ঢুকেছে নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে। বাঙালি নন-বাঙালি তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের। আমাদের যেন কোনো বদনাম না হয়।’

যুদ্ধের সময় এখনকার বীরদের মতো ছিলাম না। যুদ্ধের সময় প্রকৃত কর্মী এবং দেশপ্রেমিক যোদ্ধা ছিলাম। যুদ্ধ ক্ষেত্রে ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের জন্য ছিল দিকনির্দেশনা। কান পেতে শুনলেই সব সমস্যার সমাধান পেয়ে যেতাম। তাঁর অবর্তমানে কী করতে হবে তাও বলেছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণের আরও গুরুত্ব এবং মর্যাদা হওয়া উচিত ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনা অনেকবার বলেছেন, ‘বিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শোনা বন্ধ করে দিয়েছিল।’ না, কথাটা তেমন নয়। সরকারিভাবে ৭ মার্চের কোনো গুরুত্ব দেওয়া হতো না, সরকারি কোনো মাধ্যমে ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হতো না। কিন্তু দেশের কোটি কোটি মানুষের পবিত্র অন্তরে ৭ মার্চের ভাষণের মর্যাদা ছিল। এটা বলতেই হবে, এখন সব জায়গায় ভাষণ আছে, কিন্তু মর্যাদা নেই। অনেক বিজ্ঞাপনদাতা তাদের বিজ্ঞাপনের আগেপিছে ৭ মার্চের ভাষণ বাজায়। এই তো তিন দিন আগে আমি তখন টাঙ্গাইলে, জেলা প্রশাসনের পক্ষে তথ্য বিভাগ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাচ্ছিল আর মাঝেমধ্যে ৭ তারিখের অনুষ্ঠান সূচি ঘোষণা করছিল। এত দিন আওয়ামী লীগ করত, এখন প্রশাসনও সেখানে যোগ দিয়েছে। বিবেকহীনদের কর্মকান্ডে হৃদয় ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এ যেন হাট-বাজারে ওষুধ বিক্রির ক্যানভাসারের দায়িত্ব পেয়েছেন আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ মার্চ সকাল থেকে ভাষণ বাজানো হচ্ছিল, মাঝেমধ্যে ৮ মার্চ ফজলুর রহমান খান ফারুককে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যে একুশে পদক দেওয়া হয়েছে তার সংবর্ধনার ঘোষণা হচ্ছিল। সারা দিনে না হলেও ১০০ বারের কম হবে না ৭ মার্চের ভাষণটি বাজানো হয়েছে কখনো অর্ধেক, কখনো তারও কম। ৭ মার্চ সন্ধ্যায় যখন লিখছিলাম তখনো বারেবারে ভাষণটি বাজছিল। যেখানে বাজছিল সেখানে কোনো মানুষজন ছিল না। বাজছে তো বাজছেই। ৭ মার্চের ভাষণটি এখন একটি আন্তর্জাতিক সম্পদ। সে সম্পদের মর্যাদা দিতে বাজায় কিনা বলতে পারব না। চেতনা থাকলে এভাবে যত্রতত্র যখন তখন ভাষণটি বাজানো হতো না। ঘরে নিজেরা নিজেরা বাজায় শোনে সেটা যেমন সম্মানের, মাইক বেঁধে ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে রাখা ততটাই অসম্মানের। আর আমরা অবলীলায় পিতাকে সে অসম্মান করে চলেছি। বেশ কয়েকবার বলেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রিয় বোনকে বোঝাতে পারছি না এভাবে তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে বঙ্গবন্ধু রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে বিক্রি হলে বা মর্যাদাহানির শিকার হলে কেমন হয়? আমরা যে যা-ই বলি, বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই। তিনি ইতিহাসের উপাদান। ইতিহাসের স্বীকৃত পুরুষ। বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা অত সহজ নয়। আর ৭ মার্চের ভাষণ সেটাও ইতিহাসের প্রতিপাদ্য, বিশ্বস্বীকৃত বিষয়বস্তু। তাঁকে চেষ্টা করলেই মুছে ফেলা যাবে না। যখন খালি মাঠে বারবার বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজানো হয় তখন কেন যেন আপনা থেকেই বুকের ভিতর এক হুতাশের সৃষ্টি হয়, কান্না বেরিয়ে আসে। বলতে ইচ্ছে করে হায় বঙ্গবন্ধু! হায় দুর্ভাগা পিতা! তুমি মরেও শান্তি পেলে না। তোমাকে একটু শান্তিতে থাকতেও দিল না। তাই বারবার বঙ্গবন্ধুর ভাষণ যত্রতত্র বাজানো নিয়ে এ কথা-ও কথা বলি।

ঠিক আছে, অন্য দিন না হয় নির্বোধরা বাজায় বাজাল। কিন্তু ৭ মার্চ যেদিন এ ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, সেদিন ভাষণটি আনুষ্ঠানিকভাবে না বাজিয়ে রাস্তাঘাটে বারবার বাজানোর সত্যিই কি কোনো মানে হয়? জানি আমার কথা অনেকের ভালো লাগবে না। বোনের ভালো লাগবে কিনা তাও জানি না। কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি আমার অন্তরের এ কান্নাই শাশ্বত, যথাযথ।

কদিন আগে একজন প্রিয় মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বাবার বাড়ি তাঁর আমার এলাকার বাসাইলের সুন্যাতে। বাবা মারা গেলে মামার বাড়ি উল্লাপাড়ায় বড় হন। স্বাধীনতার আগে আমরা অনেকেই জানতাম না এইচ টি ইমামের বাড়ি টাঙ্গাইলের সুন্যাতে। তিনি উল্লাপাড়াতেই বড় হয়েছেন। কিন্তু বিয়ে করেছিলেন গোপালপুরে। তাই তাঁর টাঙ্গাইলের প্রতি সব সময় একটা আলাদা টান ছিল। আমাদের সম্পর্ক ছিল মামা-মামা। একজন মামা হলে আরেকজন ভাগিনা হয়। কিন্তু আমরা দুই দিকেই ছিলাম মামা। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে এইচ টি ইমাম মামা বলে ডাকতেন। সে সুবাদে আমাকেও। আমরা দুই ভাইও তাঁকে মামা বলে ডাকতাম। এইচ টি ইমামের বাবা-মা যেমন আমাদের নানা-নানি ছিলেন না, আমাদের বাবা-মাও তাঁর নানা-নানি ছিলেন না। আমরা উভয়ে উভয়ের মামা ছিলাম। সম্পর্ক সব সময় মধুর ছিল। কিন্তু তাঁর অনেক কাজই ভালোভাবে নিতে পারিনি। সেদিন বোরহান কবীরের ‘এইচটি ইমামের ডায়েরি’ শিরোনামে লেখাটি পড়লাম। ভালোই লিখেছে। ওকে পছন্দ করি ভালোবাসি তাও সব কথা অবলীলায় মেনে নিতে পারিনি। এইচ টি ইমাম একজন মেধাবী ছিলেন এতে সরিষা পরিমাণ সন্দেহ নেই। তিনি বাংলাদেশ বিপ্লবী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ও তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মোশতাকের যে মন্ত্রিসভা গঠিত হয় সে মন্ত্রিসভারও তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। এটা তাঁর সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য বলতে পারব না। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবাইকে মোশতাকের অধীনে নতুন করে শপথ নিতে হয়েছিল। কিন্তু এইচ টি ইমামকে কিছুই করতে হয়নি। তিনি স্বপদে বহাল ছিলেন। আসলে অনেকেই আমার সঙ্গে একমত হবেন না, সময়ের সঙ্গে গা ভাসিয়ে দেবেন বা দেন। কেন যেন আমি তা পারি না। নিজেকে বদলে ফেলার আর বয়স নেই। যা আছি সেভাবেই চলে যাব। মোশতাক মন্ত্রিসভার শপথের সম্পূর্ণ আয়োজন এইচ টি ইমাম করেছিলেন। তখন সেই মানুষটাকে টিভিতে আমি দেখেছিলাম। কেবিনেট সচিবকে মন্ত্রীদের এক এক করে আহ্বান করতে হয়। হাসিমুখে তিনি আহ্বান করতে পেরেছিলেন। মুখে কোনো কালিমা ছিল না। আমি এটা বলছি না, কাউকে কবর দিলে বা জানাজা পড়লে অপরাধ। কিন্তু একজনকে খুন করে আরেকজন যখন আসে তার জন্য অনুষ্ঠান করা খুনের পক্ষের কর্মকান্ড, বিপক্ষের নয়। তিনি ইচ্ছে করে বঙ্গবন্ধুর খুুুনিদের বা খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভার শপথের ব্যবস্থা করে থাকলে চরম অপরাধী আর বাধ্য হয়ে করে থাকলে কাপুরুষ। তাই আমার আপত্তি। ১৫ আগস্ট সন্ধ্যাবেলায় মোশতাক মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের এইচ টি ইমামের আহ্বান এখনো আমার বুকে বাজে। কেন যেন কিছুতেই ভুলতে পারি না। কেউ যদি কোনোভাবে ভুলিয়ে দিতে পারত তাহলে তো আমার কোনো জ্বালা থাকত না। অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী, আমি তাঁকে সহ্য করতে পারি না। আমার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। বেগম মতিয়া চৌধুরীর যখন তেজ ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে কি তারস্বরেই না ডুগডুগি বাজাতেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলের প্রথম দিকে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে নদী খননের সময় স্বেচ্ছা শ্রমিকদের উৎসাহিত করতে সে যে কি চমৎকার উদ্দীপনাপূর্ণ বক্তৃতা করতেন তার রেকর্ড এখনো আমার কাছে আছে। এগুলো আমি সহ্য করতে পারি না তাই বলি। আওয়ামী লীগের একসময়ের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধু নামের লিফলেট হাতে চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘এই যে তোফায়েল তোদের বঙ্গবন্ধু চঙ্গবন্ধুকে আমি টুকরো টুকরো করলাম।’ সেও আমার বোনকে ভরসা করে কত বড় নেতা! মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত ডিসি জিয়াউর রহমানের উলসী-জগন্নাথপুর খাল কাটা ডক্টরেট মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সেও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী! একাত্তরে যুদ্ধ চলাকালে টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত ডিসি আশিকুর রহমান যে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তিনি আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। বঙ্গবন্ধুর হত্যার জন্য প্রধানতম দায়ী জাসদের গণবাহিনী। সেই গণবাহিনীর বলতে গেলে প্রধান হাসানুল হক ইনু আমার বোনের ছায়া পেয়েছেন। এসব অসংগতি আমার চোখে বাধে তাই না বলে থাকতে পারি না। আর কদিনই বাঁচব, তাই ভয়কে জয় করে বলার চেষ্টা করি।

এইচ টি ইমাম যথার্থই মেধাবী বুদ্ধিমান ছিলেন। তাঁর জন্য আওয়ামী লীগের রাজনীতিক লোকেরা পিছিয়ে পড়েছে, রাজনীতিও হারিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ আমলানির্ভর হয়েছে পরবর্তীতে বোঝা যাবে। নির্বাচনে ধস নামার প্রধান কৃতিত্ব এইচ টি ইমামের। একসময় এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের বন্ধুরা! তোমরা কাগজপত্র দাও। শুধু তোমাদেরই চাকরি হবে। পুলিশকে ম্যানেজ করে তাদের দিয়েই তো আমরা ভোটে জিতেছি।’ এসব ভুলে যাওয়ার কথা নয়। তাই বলি প্রিয় বোরহান কবীর এইচ টি ইমামের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদকে উল্লেখ করেছে, এটা ঠিক নয়। এটা আগরতলা আর চকিরতলার মতো উপমা হয়েছে। তোফায়েল আহমেদ যেখানেই থাকুন তিনি আন্দোলনের দিকপাল, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক। ইতিহাসে তাঁর স্থায়ী স্থান কেউ টলাতে পারবে না। করুণাময় আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করি- এইচ টি ইমামকে বেহেশতবাসী করুন।

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর