বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

শিল্পবর্জ্যে বংশীর সর্বনাশ

কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার কার্যকর করুন

সাভারের হেমায়েতপুরে যে নতুন চামড়া শিল্পপল্লী গড়ে তোলা হয়েছে পাশের ধলেশ্বরী, বংশী নদীর জন্য তা দূষণের বিপদ সৃষ্টি করেছে। কারণ সেখানে বর্জ্য পরিশোধনের কোনো ব্যবস্থা নেই। চামড়া প্রক্রিয়াকরণের ফলে উৎপন্ন বর্জ্য পরিশোধন না করেই আশপাশের নালা-ডোবা ও নদীর ধারে ফেলা হচ্ছে। হেমায়েতপুরে নতুন চামড়া শিল্পপল্লী গড়ে তোলার পরিকল্পনায় বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশনের যে শর্তগুলো রয়েছে সেগুলো মানা হচ্ছে না। কারখানাগুলোর অপরিশোধিত বর্জ্য স্ক্রিনিং ও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারে সেগুলো পাঠিয়ে পরিশোধন ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এখনো গড়ে তোলা হয়নি। কঠিন ও তরল বর্জ্য পৃথক্করণের কারিগরি ব্যবস্থা নেই। চামড়া প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর যে বর্জ্য উৎপন্ন হয় সেগুলোর যথাযথ পরিশোধন ও নিষ্কাশন নিশ্চিত করা না হলে আশপাশের পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নদী ও কৃষিজমি। পানি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নদী-খাল-বিলে ফেলায় দূষিত ও কালো হয়ে গেছে এসবের পানি। এতে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠছে। বিষাক্ত পানিতে অনেকেই চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সাভারের বংশী নদীর কূল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্পকারখানা। নদীর দূষিত পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় নষ্ট হচ্ছে সবজি ও ধানের চারা। সুতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার বর্জ্যমিশ্রিত পানি শরীরে লাগলে চর্মরোগ এবং পান করলে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা রোগ হয়। সাভার ও আশুলিয়ার গ্রামে ২০টি সুতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা আছে। নদী রক্ষা ও দূষণ বন্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করতে হবে। ধলেশ্বরী নদীসহ আশপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশের দূষণ এড়ানোর প্রয়োজনে চামড়াশিল্পের বর্জ্য পরিশোধনের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাটি বাস্তবায়ন করা একান্ত জরুরি। এ ব্যাপারে আর কালক্ষেপণের সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর