মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

নিশ্চিত হোক নিরাপদ খাদ্য

রমজানকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিন

বাংলাদেশে ভেজালমুক্ত খাদ্য আর আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া যেন সমার্থক শব্দ। এমন কোনো খাদ্যপণ্য নেই যেখানে ভেজাল নেই। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে। চার দশকে আগের চেয়ে মানুষ প্রায় দ্বিগুণ খাদ্য গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। দুর্ভিক্ষ, মঙ্গা ছিল যে দেশের নিত্য সহচর তা ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। এ সাফল্য সত্ত্বেও খাদ্যের মান নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। খাদ্য নিরাপত্তাকে পাশ কাটিয়ে এখন আলোচনার মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে নিরাপদ খাদ্য। খাবারে ভেজালের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায়ই খাদ্য চালান ফেরত আসছে নানা অভিযোগে। খাবারে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। ফল দ্রুত পাকাতে দেওয়া হচ্ছে কারবাইড। সবজিতেও ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে অহরহ। বলা যায়, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার অঢেল অর্থ খরচ করলেও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে কতটুকু মনোযোগী তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। জনবলের অভাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে খাদ্য নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট আইনগুলোকে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ নামে একটা আইনের অধীনে আনা হয়। এর আওতায় গঠন করা হয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। মনে হচ্ছে আইন প্রণয়ন করেই সরকার আত্মতৃপ্তিতে ভুগছে। যথাযথ লোকবলের অভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শুধু দালানকোঠা সাজিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এ বিষয়ে গবেষণার কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে জীবনীশক্তি অর্জন ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য। ভেজাল ও ক্ষতিকর খাদ্য মানুষের জীবনীশক্তি কেড়ে নেয়। সুস্থতার বদলে অসুস্থতা নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়ায়। অনিরাপদ খাদ্য বাংলাদেশে ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ বিপদ কাটাতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে উদ্যোগী হতে হবে। বিশেষ করে সিয়াম সাধনার মাহে রমজানে এ বছর অনিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে এখন থেকে সতর্ক থাকতে হবে। জনস্বার্থে এটি সরকারের  কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর