শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বান্দার ডাকে সাড়া দিতে আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

মুহম্মাদ আশরাফ আলী

বান্দার ডাকে সাড়া দিতে আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি মানুষের প্রতি মহান সৃষ্টিকর্তার মমত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। এটি স্পষ্ট যে মানুষসহ সৃষ্টিকুলের সব প্রাণী আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আর আল্লাহতায়ালা অভাবমুক্ত। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ চান বান্দা তার কাছে দোয়া করবে। তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা আমার ইবাদত করতে অহংকার প্রদর্শন করে; অচিরেই তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।’ সুরা গাফের আয়াত ৬০। এ আয়াতে ‘ইবাদত করতে’ অর্থ হচ্ছে দোয়া করতে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে চায় না তিনি তার প্রতি রাগান্বিত হন।’ তিরমিজি। বান্দা আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তিনি খুশি হন। যারা বারবার তাঁর কাছে ধরনা দেয় তিনি তাদের ভালোবাসেন এবং তাদের নিকটবর্তী করে নেন।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিরা এ বিষয়টি অনুধাবন করেছিলেন তাই তুচ্ছ বিষয় হলেও তা আল্লাহর কাছে চাইতেন। সৃষ্টিকুলের কারও কাছে সাহাবিরা প্রার্থনার হাত প্রসারিত করতেন না। এটা এ কারণেই সম্ভব হয়েছিল যে তারা আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছিলেন, তাঁর নৈকট্য লাভ করেছিলেন এবং তিনিও তাদের নৈকট্য দান করেছিলেন। কেননা তাদের দৃষ্টি ছিল আল্লাহর এ বাণীর প্রতি, ‘আমার বান্দা যদি আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে; আমি তো নিকটেই আছি।’ সুরা বাকারা আয়াত ১৮৬। আল্লাহর কাছে দোয়ার বিশেষ একটি স্থান আছে; বরং দোয়া আল্লাহর কাছে সর্বাধিক সম্মানিত বিষয়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উল্লেখ করেছেন, দোয়াকারী তিনটি বিষয়ের যে কোনো একটি অবশ্যই পাবে। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘যে কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে দোয়া করবে- যে দোয়ায় কোনো গুনাহ থাকবে না, কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে না। তাহলে আল্লাহ তাকে নিম্নলিখিত তিনটির যে কোনো একটি দান করবেন-

১. তার দোয়া দুনিয়াতেই কবুল করা হবে। ২. আখিরাতে তার জন্য তা সঞ্চয় করে রাখা হবে। ৩. তার দোয়ার অনুুরূপ একটি বিপদ থেকে তাকে মুক্ত করা হবে। তারা (সাহাবিরা) বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব। তিনি বললেন, আল্লাহ আরও বেশি দানকারী।’ আহমাদ।

দোয়ার প্রকারভেদ : দোয়া দুই প্রকার- ১. ইবাদতের দোয়া যেমন নামাজ, রোজা ইত্যাদি। ২. নির্দিষ্টভাবে কোনো বস্তু চাওয়ার জন্য দোয়া। সর্বোত্তম আমল হচ্ছে আল কোরআন পাঠ, তারপর উত্তম হচ্ছে জিকির ও আল্লাহর প্রশংসামূলক কথা, তারপর হচ্ছে দোয়া ও প্রার্থনা। আরাফাত দিবসে (আরাফাতের মাঠে) কোরআন পাঠের চেয়ে দোয়া করাই উত্তম। ফরজ নামাজান্তে কোরআন তিলাওয়াতের চেয়ে হাদিসে প্রমাণিত জিকির-আজকার পাঠ করাই উত্তম ও সুন্নত।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সর্বক্ষণ তাঁকে স্মরণ ও তাঁর রহমত প্রার্থনা করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর